লিখুন
ফলো

দ্বিচক্রযান বা সাইকেল : যেভাবে ইতিহাসের পথে চলতে চলতে বর্তমান রুপ পেলো সাইকেল [পর্ব : ১]

বাইসাইকেল শব্দের অর্থ হলো দ্বিচক্রযান। এই দ্বিচক্রযান বা বাইসাইকেল চেনে না এমন মানুষ পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। আমরা হয় এই বাহনটি চালাতে পারি নয়তো জীবনে কখনো না কখনো এটি চালাতে শেখার চেষ্টা করেছি। এটিকে অনেকে বাইকও বলে থাকেন। একদম সহজ ভাষায় বলতে গেলে বাইসাইকেল, বাইক বা দ্বিচক্রযান হলো সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এমন একটি দুই চাকা বিশিষ্ট যন্ত্র বা যান, যেটির চলার শক্তি আসে বাহকের পা থেকে। সাইকেলের যে প্যাডেল বা পা-দানী থাকে সেটির মাধ্যমে বাহক এই শক্তি যোগান। একটি সাইকেল সাধারণত ৪টি মূল অংশ নিয়ে গঠিত হয়। এগুলো হলো : ১. ফ্রেম বা বডি ২. চাকা ৩. চেইন এবং ৪. ব্রেক। 

Image Courtesy : unsplash.com
সাইকেল চালক বা বাহক একটি আসনে বসে সামনের দিকে ঝুঁকে সাইকেল চালিয়ে থাকেন। এইসময় তিনি সামনে থাকা হ্যান্ডেলবারে হাত স্থাপন করেন। এই হ্যান্ডেলবারের সাথে নীচের দিকে চাকা যুক্ত থাকে। বাহকের পায়ের কাছে একটি চাকতি থাকে, যেটি সাধারণত লোহার হয়ে থাকে এবং এখানে থাকে কাঁটার মত অংশ। এই চাকতির কাঁটার সাথে যুক্ত থাকে চেইন বা শেকল।

চালক যখন প্যাডেলে চাপ দেন, তখন চাকতির সাথে সাথে চেইনটি এবং তার সাথে অপর একটি ছোট চাকতির সাহায্যে যুক্ত থাকা সাইকেলের পেছনের চাকাটিও ঘুরতে শুরু করে। এতে করে বাহকের মনুষ্য শক্তি গতিশক্তিতে রুপান্তরিত হয় এবং সাইকেলটি চলতে শুরু করে। সাইকেল চালনা খুব বেশি কঠিন না। একটু চেষ্টা করলেই এটা আয়ত্ব করা সম্ভব। একটু আয়াসের সাথে চেষ্টা করলে আপনি সহজেই ১৬-২৪ কি.মি বা ১০-১৫ মাইল বেগে সাইকেল চালাতে পারবেন, যা হাঁটার গতি থেকে ৫ গুণ বেশি। এবং হাঁটার মতই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। যারা সাইকেল চালান তাদেরকে সাইক্লিস্ট বা বাইসাইক্লিস্ট বলা হয়। সাইক্লিংকে পেশা হিসেবে নেওয়ারও সুযোগ আছে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ ক্রীড়াযজ্ঞ অলিম্পিকে সাইক্লিং ইভেন্ট রয়েছে।

সাইকেল জিনিসটা কি আর এটি কিভাবে চালানো হয় তা তো জানা হলো। অন্য সকল বস্তুর মত এটিও নানা পরিবর্তনের মাধ্যমে বর্তমান অবস্থায় এসে পৌঁছেছে। আসুন এবার জেনে নিই সাইকেলের ইতিহাস সম্পর্কে।

সাইকেল

সাইকেলের আবিষ্কারের ব্যাপারে ঐতিহাসিকরা একমত হতে পারেন নি এবং এটি আবিষ্কারের সময়কালের ক্ষেত্রেও মতবিরোধ দেখা যায়। হতে পারে ইতিহাসের নানা কালে নানা বিবর্তনের মাধ্যমে সাইকেল নামক যানটি বর্তমান অবস্থায় এসে পৌঁছেছে। লিওনার্দো ডা ভিঞ্চি তাঁর ১৪৯২ সালে প্রকাশিত কোডেক্স অ্যাটলান্টিকাস নামক গ্রন্থে সর্বপ্রথম সাইকেলের স্কেচ এঁকেছিলেন বলে কৃতিত্ব দেওয়া হতো। কিন্তু পরে গত শতাব্দীর ষাটের দশকে জানা যায় এটি সঠিক নয়। ভেলোসিফেরে বা সেলোসিফেরে নামক একটি যন্ত্রকে সাইকেলের উত্তরসূরী ভাবা হতো। এটি ছিলো ১৭৯০ এর দশকের একটি দ্রুতগামী ঘোড়া-টানা বাহন। কিন্তু এটিকে এখন আর সাইকেলের আদিপুরুষ ভাবা হয় না।

সর্বপ্রথম আরোহী-চালিত, দুই চাকা বিশিষ্ট যন্ত্রের নাম ড্রেইসিয়েন; এর অকাট্য প্রমাণও রয়েছে। ড্রেইসিয়েন এর আবিষ্কারকের নাম ব্যারন কার্ল ভন ড্রেইস ডে সাওয়ারব্রান। তিনি ছিলেন জার্মান নাগরিক। ১৮১৭ সালে তিনি এটিতে চড়ে ১৪ কি.মি (৯ মাইল) পাড়ি দেন এবং পরের বছর প্যারিসে এটির প্রদর্শনী করেন। যদিও কার্ল ভন ড্রেইস এটিকে লাউফমাশিন (ইংরেজিতে যার অর্থ হয় ‘রানিং মেশিন’) নামে ডাকতেন, তথাপি এটির নাম হিসেবে ড্রেইসিয়েন এবং ভেলোসিপিড নামে বেশি জনপ্রিয়তা পায়। যন্ত্রটি ছিলো কাঠের তৈরী এবং চালক মাটিতে ধাক্কা দিয়ে দিয়ে এটিকে সামনের দিকে ধাবিত করতো। চালকের হাত রাখার জন্য যন্ত্রের সামনে জায়গা ছিলো। ভন ড্রেইস প্যাটেন্টের মালিক হলেও তার যন্ত্রের নকল তৈরীর হিড়িক পড়ে যায় আশেপাশে। যুক্তরাজ্য, অস্ট্রিয়া, ইতালি এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও দেখা যায় ড্রেইসিয়েনের কপি।

Image Courtesy : sarahshistoryplace

লন্ডন শহরের ডেনিস জনসন নামে এক ব্যক্তি একটি ড্রেইসিয়েন কেনেন এবং এর একটি আরো উন্নত সংস্করণ তৈরী করেন৷ তিনি ১৮১৮ সালে এই যন্ত্রের প্যাটেন্ট করেন এবং নাম দেন পেডেস্ট্রিয়ান কারিকল। পরের বছর তিনি ৩০০টিরও অধিক সংখ্যক পেডেস্ট্রিয়ান কারিকল তৈরী করেন। জনসাধারণের কাছে এগুলো পরিচিতি পায় হবি-হর্স নামে। তখন এগুলোর দাম ছিলো অত্যন্ত চড়া এবং কেবল অভিজাত শ্রেণীর লোকদেরই ক্ষমতা ছিলো ক্রয় করার। লোকজন প্রায়ই এগুলোকে ব্যঙ্গ করে ড্যান্ডি হর্সেস নামে ডাকতো এবং এগুলোর মালিকরাও রেহাই পেতেন না। তাদের ফুলবাবু বলে ডাকা হতো এবং নানা ধরণের টিটকারি মারা হতো।

Image Courtesy : sciencemuseumgroup

একটা সময় এসে পেডেস্ট্রিয়ান কারিকলের নানা খুঁত ধরা পড়লো। এটির ডিজাইনের কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা গেলো। এছাড়াও দেখা গেল যে, রাস্তা যদি মসৃণ না হয়, তাহলে এগুলো চালানো অসম্ভব। মাত্র ৬ মাসের মাথায়ই ডেনিস জনসন তাঁর আবিষ্কৃত যন্ত্রের উৎপাদন বন্ধ করে দেন।

ভন ড্রেইসের ড্রেইসিয়েন বা জনসনের হবি-হর্সকে আসলে সে অর্থে সাইকেল বলা যায় না। এগুলো আসলে ছিলো এমন যন্ত্র যেগুলো গতিশীল অবস্থায় ব্যালেন্স ধরে রাখতে পারতো। হবি-হর্স এর ব্যর্থতার পরের ৪০ বছর পর্যন্ত উদ্ভাবকরা মনুষ্য চালিত তিন বা চার চাকার সাইকেলের ব্যাপারে নানা পরীক্ষা-নীরিক্ষা চালিয়েছেন।

বাইসাইকেলের বাকি ইতিহাস জানতে এবার আমাদেরকে চোখ দিতে হবে স্কটল্যান্ডের দিকে। ঐ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে ১৮৪০ এর দশকে পা দিয়ে চালানো সম্ভব এমন কিছু দুই চাকা বিশিষ্ট যন্ত্রের অস্তিত্ব থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। এগুলোর সাথে সবচেয়ে বেশি জড়িয়ে আছে কার্কপ্যাট্রিক ম্যাকমিলান নামক ড্রামফ্রেইশায়ারের এক কামারের নাম। তিনি দাবী করেন ১৮৪২ সালে এগুলোতে চড়ে তিনি ৪০ মাইল (৬৪ কি.মি) দূরের গ্লাসগো শহরে গিয়েছেন। কিন্তু নিজের দাবীর স্বপক্ষে উপযুক্ত প্রমাণ ছিলো না ওনার কাছে।

লেসমাহাগো নামক শহরের গ্যাভিন ডালজেল নামে এক ব্যক্তিও কাছাকাছি সময়ে এমন একটি দুই চাকার যান বানিয়েছিলেন। এটির চাকা ছিলো কাঠের এবং এগুলোতে লোহার বেড় লাগানো ছিলো। গ্লাসগোর পরিবহন জাদুঘরে এই বাহনটি সংরক্ষণ করা হয়েছে। এ যানটি চলতো এভাবে : চালক আসনে বসে ট্রেডলকে (পা দিয়ে নাড়ানো যায় যন্ত্রের এমন অংশ) আগে-পিছে করতো৷ নড়তে সক্ষম এমন একটি রডের মাধ্যমে ট্রেডলটি যুক্ত থাকতো পেছনের চাকার সাথে। এই পেছনের চাকায় ক্র্যাঙ্ক নামে একটি অংশ থাকতো। মূলত এটি একটি বাকানো হাতল যেটি যন্ত্রকে ঘোরাতে সাহায্য করে। এটির সাথে সংযুক্ত থাকতো নড়তে সক্ষম রড। এবার ট্রেডল এবং রডের নড়ন-চড়নের ফলে ক্র্যাঙ্কের মাধ্যমে পেছনের চাকাটি ঘুরতো এবং যানটি এগিয়ে যেত। অষ্টাদশ শতকের ষাটের দশকে থমাস ম্যাককল নামে অপর এক স্কটিশ ভদ্রলোকও এরকম যন্ত্র তৈরী করেছিলেন।

Image Courtesy : bbc.com

সান্ত দুনি নামক স্থানের আলেক্সাদ্রা লাফ্যাব্রা নামক এক ফ্রেঞ্চ ভদ্রলোক ১৮৪২ সালে ক্র্যাঙ্ক এবং ট্রেডল বিশিষ্ট ২ চাকার একটি বাইসাইকেল বানিয়েছিলেন বলে জানা যায়। ১৮৬১ সালে লাফ্যাব্রা আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায় অভিবাসী হন৷ তখন তিনি তাঁর আবিষ্কৃত সাইকেলটিকে সাথে করে নিয়ে যান। সেই সাইকেলটি এখন স্যান হোসে এর হিস্ট্রি মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে। স্কটিশ উদ্ভাবকগণ বা লাফ্যাব্রা কেউই তাঁদের আবিষ্কারগুলোকে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে উৎপাদন বা বিপণন করেন নি। এছাড়া এগুলোর কোন উন্নত সংস্করণ তৈরীর ব্যাপারেও তাঁদের আগ্রহ ছিলো না।

বাইসাইকেল শব্দটি প্রথম ইউরোপে ব্যবহৃত হয় ১৮৬৮ সালে। এর আগে সাইকেল শব্দের পরিবর্তে ব্যবহৃত হতো ভেলোসিপিড দে পিদাল, যেটির উচ্চারণ ছিলো কষ্টসাধ্য। প্যাডেল বিশিষ্ট প্রথম ভেলোসিপিড বা তিন চাকা বিশিষ্ট সাইকেল তৈরী করা হয় অষ্টাদশ শতকের ষাটের দশকে ফ্রান্সে। এর প্যাডলগুলো সংযুক্ত ছিলো সামনের চাকায়। কিন্তু কার মাথায় প্রথম সামনের চাকায় প্যাডেল স্থাপনের আইডিয়া আসে তা নিশ্চিতভাবে জানা যায় নি। পিয়ের লালমা নামক এক ফ্রেঞ্চ মেকানিক ১৮৬৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে এমন একটি যন্ত্র বানিয়েছিলেন এবং তার প্রদর্শনী করেছিলেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। এই ব্যক্তি ১৮৬৫ সালে আরো উন্নত একটি যন্ত্র বানানোর যন্ত্রাংশ নিয়ে আমেরিকায় গমন করেন এবং কানেকটিকাটের অ্যানসোনিয়ায় তার নির্মাণ সম্পন্ন করেন। পরের বছর তিনি এটির প্যাটেন্ট পান কিন্তু এই যন্ত্র বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের জন্য কাউকে তিনি খুঁজে পান নি। ফলে ১৮৬৮ সালে তিনি নিজের দেশে ফিরে আসেন।

সেই বছরই আবার মিশো এহ সিনামে এক ফরাসী কোম্পানির তৈরীকৃত ভেলোসিপিড আমেরিকায় এই যন্ত্রের ব্যাপারে ক্রেজ সৃষ্টি করে। যার ফলশ্রুতিতে পিয়ের লালমা ২০০০ ডলার মূল্যে তাঁর প্যাটেন্টটি ক্যালভিন উইটি নামে এক আমেরিকান উদ্যোক্তার কাছে বিক্রি করতে সমর্থ হন। এভাবেই আস্তে আস্তে আমেরিকান ইন্ডাস্ট্রিতে সাইকেল উৎপাদনের চল শুরু হয়।

পিয়েরে মিশো এবং তাঁর ছেলে আর্নেস্ট প্যাডেল-চালিত ভেলোসিপিডের প্রদর্শনী করেন ১৮৬০ এর দশকে। নথিপত্র অনুযায়ী তাঁরা ১৮৬৪ সালের শুরুতে প্যারিসে এই যন্ত্র বানান। তাঁদের বানানো যন্ত্রগুলোতে ছিলো কাস্ট আয়রনের ফ্রেম এবং তাঁরা বৃহৎ আকারে বাণিজ্যিক উৎপাদনে আগ্রহী ছিলেন। তাদের ভেলোসিপিডের ক্র্যাঙ্ক এবং প্যাডেল যুক্ত ছিলো সামনের চাকায় এবং এগুলোর পেছনের চাকার আকৃতি ছিলো কিছুটা ছোট। যদিও এই ডিজাইনটির আবিষ্কারক তাঁরা ছিলেন না, তথাপি তাঁরা তৎকালীন সময়ে বিদ্যমান মডেলের বেশকিছু উন্নতি সাধন করেন এবং সেগুলোর প্যাটেন্ট করেন।

Image Courtesy : dailysabah

মিশোর প্যাডেল সাইকেলের পথিকৃৎ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পেছনে অবদান রয়েছে রেঁনে এবং আইমে অলিভিয়েরের৷ এই অলিভিয়ের ভাতৃদ্বয় ছিলেন ধনী এবং তরুণ। তারা নিজেদের ভেলোসিপিডে চড়ে ৮০০ কি.মি বা ৫০০ মাইল পাড়ি দিয়ে প্যারিস থেকে মার্শেই শহরে পৌঁছান। সাইক্লিংকে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় করতে এবং তারুণ্য, ফিটনেস এই ব্যাপারগুলোর সাথে সাইকেলকে মিলিয়ে দিতে তাঁদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তারা ৫০,০০০ ফ্রঁ এর বিনিময়ে মিশোর কোম্পানির ৬৯% স্টক কিনে নেন এবং বড় আকারের কারখানায় উৎপাদন শুরু করেন।

১৮৬৭ সালে সাইকেলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এবছর প্যারিস এক্সপোজিশন অনুষ্ঠিত হয় এবং এখানে আসা মানুষজন চারপাশে ভেলোসিপিড দেখে এগুলো সম্পর্কে আগ্রহী হয়। যার ফলশ্রুতিতে এর জনপ্রিয়তা বেড়ে যায় এবং ১৮৬৮ সাল নাগাদ পুরো ফ্রান্সজুড়ে রাস্তাঘাটে ভেলোসিপিড দেখা যাওয়া একটি সাধারণ দৃশ্যে পরিণত হয়।

আরো পড়ুনঃ

বাইসাইকেল নিয়ে ২য় পর্ব

ডু দ্যা রাইট থিং (1989) : স্পাইক লির ম্যাগনাম ওপাস যা তিন দশক পর এখনও প্রাসঙ্গিক

১৮৬৯ সালে অলিভিয়ের ভাতৃদ্বয় মিশো এহ সি কোম্পানির পুরো ক্ষমতা নিজেদের হাতে নিয়ে নেন। এসময় তারা মাসে প্রায় ২০০টি ভেলোসিপিড উৎপাদন করতেন। তৎকালীন সময়ে ফ্রান্সে ১০০টিরও বেশি কোম্পানি ভেলোসিপিড উৎপাদন করছিলো।

Image Courtesy : sciencemuseumgroup

১৮৬৯ সালেই বল বেয়ারিং, টেনশন-স্পোকড হুইল আবিষ্কৃত হয় এবং ফ্রিহুইলের প্যাটেন্ট গৃহীত হয়। প্রথমদিকে কাঠের চাকা এবং লোহার ফ্রেমের কারণে ভেলোসিপিড চালাতে আরোহীদের খুব কষ্ট হতো। মানুষজন এগুলোকে ‘বোনশেকার’উপনামেও ডাকতো এজন্য। কিন্তু রাবারের টায়ার এবং ওয়াইয়ার-স্পোকড হুইল আসায় আরোহীদের কষ্ট লাঘব হলো। পরের বছর ‘বোনশেকার’গুলোকে সকলে যেন ব্যবহার করতে পারে এমন রুপ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিলো ‘অর্ডিনারি’ বা সাধারণ নামে। কিন্তু ফ্রান্স এবং জার্মানির মধ্যে ফ্র্যাঙ্কো-জার্মান যুদ্ধ শুরু হওয়ার কারণে তা আর সম্ভব হয় নি৷ ফ্রেঞ্চ ইন্ডাস্ট্রি টিকে গেলেও নতুন তেমন প্রযুক্তি আর আনতে পারে নি।

এরপর সাইকেল বা ভেলোসিপিড ইন্ডাস্ট্রিতে নেতৃত্ব দিতে শুরু করে ব্রিটেন। পরবর্তী অংশে আমরা সে ব্যাপারে আলোচনা করবো।

This is a Bangla article. This article is about the history of the bicycle.

All the necessary links are hyperlinked.

Featured images are collected from Google.

Total
0
Shares
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous Article

স্টেট অফ গ্রেইস (1990) : নাইন্টিজের আন্ডাররেটেড জেম

Next Article

দ্বিচক্রযান বা সাইকেল : যেভাবে ইতিহাসের পথে চলতে চলতে বর্তমান রুপ পেলো সাইকেল [পর্ব : ২]

Related Posts

ভিয়েতনাম যুদ্ধ: মার্কিন বাহিনীর পরাজয়ের করুণ ইতিহাস (পর্ব-১)

বিংশ শতাব্দীর ইতিহাসে ভিয়েতনামের স্বাধীনতা সংগ্রাম একটি অন্যতম উল্লেখযােগ্য ঘটনা। ভিয়েতনাম যুদ্ধ ছিল একটি দীর্ঘস্থায়ী বিপ্লবী যুদ্ধ। এই…

দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ হওয়ার কারণ এবং যার ফলশ্রুতি এর ভয়াবহ পরিণতি

দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ হলো বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে আলােচিত ও দুঃখজনক ঘটনা। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের স্থায়িত্ব ছিল ১৯৩৯ সাল…

পাস্তাঃ যে খাবার ছাড়া ইতালিয়ানরা এক প্রকার অসম্পূর্ণ

সূচিপত্র Hide পাস্তা যা এখনকার দিনগুলোতে খাবারের মধ্যে খুবি জনপ্রিয় একটা নাম। সন্ধ্যা বেলায় ঘরে-বাইরে কোন খাবারের কথা…

আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন

Total
0
Share