লিখুন
ফলো

ভেটেরান (২০১৫) : গতানুগতিক অ্যাকশন/ক্রাইম ধারার বাইরে গিয়ে যে সিনেমা সামাজিক বৈষম্য, ধনীদের স্বেচ্ছাচারিতা আর দুর্নীতিকে তুলে ধরে

“আমি দুঃখিত, প্রিয়তমা। ক্ষিধা আর অবিচারের কারণে জীবন কঠিন হয়ে পড়েছে। আমি শুধু চাই মানুষ হিসেবে সম্মানের সাথে মাথা উঁচু করে বাঁচতে কিন্তু অল্পকিছু টাকার জন্য আমার সাথে নর্দমার কীটের মত আচরণ করা হয়। আমার পক্ষে আর এভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব না। ক্ষমতাবানদের শাস্তি দেয়ার এটাই একমাত্র পথ। দয়া করে আমাকে মাফ করে দিও।”

গল্পের একটা পর্যায়ে গিয়ে ড্রাইভার বেএর মোবাইল থেকে এই ক্ষুদে বার্তাটি আসে তার স্ত্রীর নাম্বারে। এই সিনেমায় এই ক্ষুদে বার্তাটি এবং তার আগের ও পরের ঘটনাবলী খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এখানকার দুই প্রধান চরিত্র আগে থেকেই চিনলেও এসব ঘটনা তাদের একজনকে অন্যজনের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়। আর আমরাও দেখি চিরন্তন ভালো-মন্দের দ্বন্দ্বের মঞ্চায়ন।



ভেটেরান সিনেমাটির কোরিয়ান  নাম বেটেরাং।এটি ২০১৫ সালের ৫ই আগস্ট মুক্তিপ্রাপ্ত একটি ক্রাইম/কমেডি/ড্রামা/থ্রিলার ফিল্ম যার পরিচালক এবং গল্পকার রাইয়ু সিউং-ওয়ান।অ্যাকশন মুভি পরিচালনার জন্য বিখ্যাত রাইয়ুর এটি ১১তম চলচ্চিত্র। ৫.১ মিলিয়ন ডলারের বাজেটের বিপরীতে এটি আয় করে ৯২ মিলিয়ন ডলারেরও অধিক, যার ফলে এটি কোরিয়ান সিনেমার ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি আয় করা চলচ্চিত্রের তালিকায় ৫ম স্থান দখল করে নেয়। ১২৩ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই সিনেমাটি স্পেনের সিটজেস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘কাসা এশিয়া’পুরস্কারও জিতেছে। 
ভেটেরান
Image Source : koreaherald.com

ভেটেরান (২০১৫) এর আইএমডিবি রেটিং ৭ এবং রটেন টমাটোজে ৯০% ফ্রেশনেস নিয়ে অবস্থান করছে এটি। এটির সিনেম্যাটোগ্রাফিতে ছিলেন চৌই ইয়ং-হুয়ানএবং সংগীত পরিচালনায় ছিলেন ব্যাং জুন-সিউক।এডিটিং করেছেন কিম স্যাং-বামএবং কিম জে-বামজুটি। স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্সে দেখা যাবে মুভিটি। 

কাহিনীর শুরু হয় হালকা চালে, যেখানে আমরা দেখি সিউল মেট্রোপলিটন ক্রাইম ব্যুরোর ডিটেকটিভ সেউল দো-চেউলকে (হুয়াং জাং-মিন)।তিনি একটি রুটিন মিশনে যান একদল গাড়ি চোরাচালানকারীকে ধরতে। এই দলকে তাদের রাশিয়ান ক্রেতাদের সাথে টাকা লেনদেনের সময় হাতে-নাতে ধরতে তিনি একটি ট্রাক ভাড়া করে বুসান জেটিতে যান৷ মুভির মাত্র ৭ মিনিটের মাথায়ই আমরা প্রথম থ্রোডাউন দেখতে পাই। যদিও ইতালিয়ান রোমান্টিক মুভিতে যেভাবে বারবার ট্রেভি মাউন্টেনকে দেখানো হয়েছে, ঠিক সেভাবেই বুসান জেটিকে বারবার কোরিয়ান গ্যাংস্টার জনরার সিনেমায় দেখানো হয়েছে। তথাপি রাইয়ু তার চলচ্চিত্রে এই স্থানকে নবরূপে ব্যবহার করেছেন। 



এই পুলিশ অপারেশনকে দেখাতে তিনি জেটিতে গোলক ধাঁধাঁর মত ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ফ্রেইট কন্টেইনারকে ব্যবহার করেছেন। ফ্রেইট কন্টেইনারের এই ধাঁধার ভেতরের আঁটসাঁট জায়গাগুলোতে আমরা মিশনে অংশ নেওয়া ব্যুরোর সদস্যদেরকে চোরাকারবারীদের সাথে ডায়নামিক কমব্যাটে অংশ নিতে দেখি। সাথে ছিলো স্ল্যাপস্টিক হিউমারের অনবদ্য ব্যবহার। এবং এই মিশনের সময় থেকেই আমরা উপলব্ধি করতে পারি যে আমাদের ভেটেরান ডিটেকটিভ চেউল সবসময় ব্যুরোর নিয়ম-কানুন মেনে কাজ করেন না, তবে নিজের সততাকে অটুট রেখেই তিনি কার্য সমাধায় সিদ্ধহস্ত। যা প্রমানিত হয় তার এই কথায়, “আমাদের হয়তো খুব বেশি টাকা-কড়ি নেই, তবে আমাদের আত্মসম্মানবোধ আছে।” 

Image Source : variety.com

এরপরই চো তে-ওহ্ (ইয়ো আহ-ইন)এর দেওয়া এক হাই-সোসাইটি পার্টিতে আমরা রাফ অ্যান্ড টাফ দো-চেউলের ব্যক্তিত্বের কুল ব্যাপার-স্যাপার দেখতে পাই। পার্টিটা তিনি খুব ভালোভাবেই উপভোগ করছিলেন এবং একপর্যায়ে বলেন, বড়লোকদের পার্টি তো আমাদের পার্টির মতই। এই কথা তে-ওহ্ এর গায়ে লাগে এবং সে ইচ্ছা করেই দো-চেউলকে ভড়কে দেওয়ার জন্য সাইকোপ্যাথিক আচার-আচরণ শুরু করে। মনে মনে তে-ওহ্ এর উপর রুষ্ট হলেও মুখে কিছু বলেন না ভেটেরান ডিটেকটিভ। তে-ওহ্ দো-চেউলের নার্ভের প্রশংসা করে। এই দুই চরিত্রের মধ্যে এই যে ক্ল্যাশ তা মুভির পরের অংশে আরো উত্তপ্ত রুপ ধারণ করবে। 



দো-চেউলের ব্যাপারে আরো একটু বিশদভাবে আমাদের জানা প্রয়োজন। নিজের কাজ ঠিকঠাকমত করে গেলেও তিনি তার প্রাপ্য সম্মান পান না। নানা বাধার কারণে অনেক কাজ চাইলেও করতে পারেন না। সারাদিন কাজ করার পর বাসায় গেলেও শান্তি নেই। ছেলের ভবিষ্যত, বাড়ীর মর্টগেজের টাকা ইত্যাদি নিয়ে স্ত্রীর খোঁটা শুনতে হয় তাকে। কোরিয়ান সিনেমার চরিত্রদের মাঝে যে জীবনের অর্থহীনতা বা অ্যাবসার্ডিটির ভাব থাকে, তা দো-চেউলের মাঝেও রয়েছে। আর এই চরিত্রের রূপায়ণে নিজের টপনচ পার্ফম্যান্সটাই দিয়েছেন হুয়াং।

বুসান জেটিতে যেতে দো-চেউল যে ট্রাক ভাড়া করেছিলেন সেটি মনে আছে? এই ট্রাকের ড্রাইভার হলেন বে (জুং ওং-ইন)।যাত্রাপথে এই অমায়িক দূরপাল্লার ট্রাক চালকের সাথে দো-চেউলের বন্ধুত্ব হয়ে যায় এবং নিজের কার্ড দিয়ে দরকার পড়লে তাকে ফোন করতে বলেন তিনি। পরবর্তীতে এই বে’র সাথে ঘটা একটি ঘটনাই গল্পের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। 

Image Source : imdb.com

তার সাথে সাবকন্ট্রাক্টরজিয়ন (জাং ম্যান-সিক)এর সাথে দ্বন্দ্ব লাগে পাওনা টাকা নিয়ে। জিয়ন কাজ করে আকারে বৃহৎ কিন্তু কর্মকান্ডে নীতিহীন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান সিন জিন ট্রেডিংয়ে। কর্মচারীরা ইউনিয়ন গঠন করায় এই কোম্পানি তাদের পাওনা আটকে রেখেছে। 

এই সমস্যার সুরাহা করতে বে সিন জিনের মূল অফিসে গেলে তার সাথে দেখা হয় তে-ওহ্’র সাথে। এরপর যে নৃশংস ঘটনার অবতারণা হয় তা দর্শককে একইসাথে আনইজি এবং রাগান্বিত করতে যথেষ্ট। রাইয়ুও এই দৃশ্যের চিত্রায়ণে কোন খামতি রাখেন নি, ধনী এবং পেশীশক্তিতে বলীয়ানদের অনুতাপবিহীন স্যাডিজমকে তুলে ধরেছেন একদম খোলাখুলিভাবে। সবচেয়ে হৃদয় বিদারক ব্যাপার হলো এইসব ঘটনা যখন ঘটছিলো তখন বে’র ছোট্ট সন্তান তার সাথেই ছিলো। তে-ওহ্ যেসব অনৈতিক কর্মকাণ্ড করে তা ধামাচাপা দেওয়ার কাজ করেন তার কাজিন ভিপি চৌই (ইউ হে-জিন)।তিনি বিশ্বাস করেন পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ খরচ করতে পারলে আর ঠিক জায়গায় কানেকশন থাকলে খুন করেও বেঁচে যাওয়া সম্ভব। চৌই আর নিজের অন্যান্য কানেকশনের মাধ্যমে তে-ওহ্ হয়তো অপরাধ করে পারও পেয়ে যেত কিন্তু তাতে বাধ সাধে দো-চেউল এবং তার মতই একরোখা তার দলের সদস্যরা। তারা যেকোন মূল্যে তে-ওহ্কে ধরে আইনের আওতায় নিয়ে আসার প্রতিজ্ঞা করে।



এতক্ষণ পর্যন্ত পড়ে পাঠক নিশ্চয়ই এটা তো বুঝে গেছেন যে ডিটেকটিভ দো-চেউলই হলেন এই গল্পের প্রোটাগনিস্ট বা নায়ক। এবার আমরা জানবো অ্যান্টাগনিস্ট সম্পর্কে। এই সিনেমার কাহিনীতে তার ভূমিকাও অপরিসীম। তে-ওহ্ হলো এই সিনেমার মূল অ্যান্টাগনিস্ট। বিদেশে পড়াশোনা করে আসা ওহ্ বড়লোকের বখে যাওয়া সন্তানের উৎকৃষ্ট উদাহরণ। মাদক, নারীলিপ্সা থেকে এমন কোন খারাপ অভ্যাস নেই যা তার নেই। তার উপর তার মধ্যে রয়েছে সাইকোপ্যাথিক টেন্ডেন্সি। তার মতে সে কোরিয়ায় যা খুশি তা করতে পারবে, কেউ তার কিছুই করতে পারবে না। কিন্তু তার মনেও যে সুখ আছে তা কিন্তু না। 

সিন জিন ট্রেডিংয়ে তার নিজের যোগ্যতাকে প্রমাণ করতে হবে নয়তো তার সৎভাই বা সৎবোন কোম্পানির সবকিছু নিয়ে যাবে, কানাকড়িও পাবে না সে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে তার যোগ্যতার প্রতি তার বাবার অবিশ্বাস। নিজের অক্ষমতাকে ঢাকতেই অন্যদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে সে। তে-ওহ্ চরিত্রের এই যে নানামুখী ভাব, এগুলোর প্রকাশে ইয়ো-ইন ছিলেন অনবদ্য। এই চরিত্রকে যেসব অন্তর্দ্বন্দ্বের মুখোমুখি হতে হচ্ছিলো তা যেন অভিনেতার মুখের দিকে তাকালেই বোঝা যাচ্ছিলো। এখানে অভিনয়ের জন্য বেশ খেটেছেনও ইয়ো-ইন। নিজের স্টান্টগুলো নিজেই করেছেন, বডি ডাবল ব্যবহার করেন নি। নিজের পার্ফম্যান্স আর দর্শক এই চরিত্রকে যেভাবে গ্রহণ করেছে তাতে খুশিই হবার কথা তার। 

২০০৮ সালে সংঘটিত অর্থনৈতিক মন্দার ফলে পৃথিবীব্যাপী যে চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়; তার ফলশ্রুতিতে আমরা বিভিন্ন অর্থনৈতিক ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান এবং এগুলোর প্রধানদের বিভিন্ন চলচ্চিত্রে ভিলেনের রোলে দেখতে পাচ্ছি। পরিচালক রাইয়ু তার এই সিনেমায় কাল্পনিক প্রতিষ্ঠান সিন জিন ট্রেডিং এর মাধ্যমে একই থিমকে অনুসরণ করেছেন। এখানে উঠে এসেছে কোরিয়ান সমাজে বিরাজমান  নানা প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি এবং লাল ফিতার দৌরাত্ম্যের কথাও, যা অনেক কোরিয়ান চলচ্চিত্রেই দেখা যায়। এই ব্যাপারগুলোরই তীর্যক সমালোচনা হতে দেখি আমরা ভেটেরান মুভিতে। আর এই ব্যাপারসমূহ শুধুমাত্র কোরিয়া নয়, পুরো বিশ্বের ক্ষেত্রেই সত্যি।



এছাড়া বর্তমান সমাজে ‘স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে মোটরগাড়ি পর্যন্ত সমস্ত ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানির স্বার্থ রক্ষিত হয়’ বা ‘বড়লোকরা নিজেদের অর্থ এবং ক্ষমতার বলে যা খুশি তা করতে পারে’ এই ধরণের বিশ্বাসগুলো প্রচলিত, তার স্বরূপও উঠে এসেছে এখানে। যা নাটকীয় হলেও দর্শকদেরকে অস্বস্তিতে ফেলে দেওয়ার জন্যে যথেষ্ট। আর কে কাকে কিভাবে ম্যানিপুলেট করে তাও এখানে দেখিয়েছেন পরিচালক। 

Image Source : en.koreaportal.com

ডিটেকটিভ দো-চেউলের সুপারভাইজার হলেন ওহ্ (ওহ্ ডাল-সু),যিনি অনেক ক্ষেত্রে দুর্নীতি হতে দেখলেও নিজের প্রমোশনের জন্য কিছু বলেন না। তিনি দো-চেউলকেও নিজের ভবিষ্যত সমৃদ্ধির জন্য এভাবে চলতে উদ্বুদ্ধ করেন। কিন্তু আমাদের প্রোটাগনিস্ট এসব ব্যাপারে তেমন মাথা ঘামান না। নিজের দলের একজন আহত হলে সুপারভাইজারও দো-চেউলের সাথে জোট বেঁধে অপরাধীকে ধরার জন্য নেমে পড়েন। পৃথিবীর সবচেয়ে কুল বসের তালিকা হলে তাতে ওহ্ এর নাম উপরের দিকেই থাকবে। একটা পর্যায়ে গিয়ে ওহ্, দো-চেউল এবং ব্যুরোর ভাইস প্রেসিডেন্টের মাঝে কথার মাধ্যমে নিজেদের পুরুষত্ব জাহির করতেও দেখি আমরা। এ ধরণের আরো কিছু ঘটনা রয়েছে এখানে।

মুভিতে শক্তিশালী নারী চরিত্রের উপস্থিতিও রয়েছে। যেমন : মেট্রোপলিটন ক্রাইম ব্যুরোর সদস্য মিস বং (জ্যাং ইয়ুন-জো),যে তায়েকোন্ডোর ফ্লাইং কিকের মাধ্যমে সবাইকে ধরাশায়ী করে। এছাড়া আছেন দো-চেউলের স্ত্রী জু-ইয়েঅন (জিন কেয়ং),যিনি ঘুষের প্রস্তাব নিয়ে আসা ভিপি চৌইকে উচিৎ শিক্ষা দেন। 



আরো পড়ুনঃ

ব্যানশি : ক্রিমিনালি আন্ডাররেটেড এক অ্যাকশন টিভি সিরিজ

ভেটেরান শব্দটির শাব্দিক অর্থ হলো ঝানু বা অভিজ্ঞ লোক। সিনেমায় এই শব্দটির মাধ্যমে ডিটেকটিভ দো-চেউলকে বোঝানো হলেও এখানকার মূল ভেটেরান হলেন পরিচালক রাইয়ু। কোরিয়ান অ্যাকশন জনরায় তিনি একজন কিংবদন্তি। বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে মুভির নির্বাচিত হওয়ার জন্য তার নামটিই যথেষ্ট। নিজের অভিষেক চলচ্চিত্র থেকেই অ্যাকশন ফিল্ম বানাচ্ছেন তিনি সফলতার সাথে। এতদিন ধরে বিভিন্নভাবে এই জনরায় নানা এক্সপেরিমেন্ট করার পর তিনি ফিরলেন একেবারে নিজের কম্ফোর্ট জোনে। নিজের ফিল্মোগ্রাফির অন্যান্য সিনেমার তুলনায় এই মুভির প্লট অনেকটাই স্ট্রেইট ফরোয়ার্ড। সোজা কথায়, ভালো খারাপের ইঁদুর-বিড়াল দৌড়। নিজের শক্তির জায়গাগুলোকেই সঠিকভাবে ব্যবহার করেছেন তিনি, নতুন কিছু করেননি। পাশাপাশি যুক্ত হয়েছে খুব ভালো লেভেলের হিউমার, যা মুভিকে করেছে আরো উপভোগ্য। এই মুভি নির্মাণের ক্ষেত্রে তিনি হলিউডের আশির দশকের কপ মুভিগুলো থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন৷ 

Image Source : imdb.com

রাইয়ুর পাশাপাশি কৃতিত্ব দিতে হবে হুয়াং এবং ইয়োকে। দুই বিপরীতমুখী চরিত্রে তাদের অসাধারণ পোট্রেয়াল ছাড়া এই মুভির গল্প পূর্ণতা পেত না। পাশাপাশি  সাপোর্টিং কাস্টের ভালো অভিনয় তো ছিলোই। ভেটেরানের সাফল্যের পেছনে আরো একজনের অনস্বীকার্য ভূমিকা রয়েছে৷ তিনি হলেন অ্যাকশন কোরিওগ্রাফার জাং ডু-হং,তার কোরিওগ্রাফি অ্যাকশন সিকোয়েন্সগুলোকে দিয়েছে ফ্লুইডিটি। এই চলচ্চিত্র দেখার অনুভূতিকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে শোভন সিনেম্যাটোগ্রাফি এবং সুন্দর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক। কোনপ্রকার সিজিআইয়ের ব্যবহার ছাড়াই সিউলের রাস্তায় শ্যুটিং করার কারণে দর্শকদের যে বাস্তবিক অনুভূতি হয়েছে তার জন্য বাহবা পাবে মুভির পুরো টীম। 

২ ঘন্টা ৩ মিনিটের রানটাইমকেও ক্ষেত্রবিশেষে লম্বা মনে হতে পারে। তবে প্রোটাগনিস্টের আগমনের মাধ্যমে গল্পে ঢুকে যেতে পারলে আর কিছু লাগবে না। তাই দেরি না করে দেখতে বসে যান পরিচালক রাইয়ুর এই মাস্টারস্ট্রোক।

This is a Bangla article. This article is a review of South Korean film Veteran (2015)

All the necessary links are hyperlinked. 

Featured images are collected from Google.

Total
0
Shares
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous Article

মঙ্গল গ্রহে পানির খোঁজ

Next Article

কোপি লুয়াক : অদ্ভুত প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত পৃথিবীর সবচেয়ে দামী কফি

Related Posts

কখনো আসেনি (১৯৬১) : পরিচালনায় জহির রায়হান নামক জিনিয়াসের আবির্ভাব

জহির রায়হান নামটি আমাদের জন্য চির আক্ষেপের। যতগুলো অনন্য কাজ তিনি করেছেন, সেগুলোর চেয়েও বেশি আলোচনা হয় তিনি…

ডিজনির জন্য নেটফ্লিক্স বাতিল

স্ট্রিমিং অবজার্ভারের মতে, প্রায় এক পঞ্চমাংশ বাবা-মা বলেছেন যে তারা ডিজনি এর জন্য নেটফ্লিক্স বাতিল করতে পারেন। অন্যদিকে, প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ পিতামাতার…

সাবস্ক্রিপশন যা ইউকে টিভির আয়ের প্রধান উৎস

টেলিভিশনের বিজ্ঞাপন শিল্প ছিলো যুক্তরাজ্যের আয়ের শীর্ষ উৎস।     ২০১৮ সালে, সাবস্ক্রিপশন থেকে টিভি আয় প্রায় ৬.৩৭ বিলিয়ন পাউন্ড দাঁড়িয়েছে। অনলাইন টেলিভিশন আয় ২.৬৪ বিলিয়ন…

টিভি ব্যবহারের জেনারেশন গ্যাপ

নীলসেনের সাম্প্রতিক মোট শ্রোতা প্রতিবেদন অনুসারে, মার্কিন প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য টেলিভিশন এখনও সবচেয়ে ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক মাধ্যম। গড়ে ১৮ বছর বা তার বেশী…

আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন

Total
0
Share