লিখুন
ফলো

অ্যানায়ুম রাসূলুম (২০১৩) : ডিকেন্সীয় প্রেক্ষাপটে শেক্সপিয়রীয় ট্র্যাজেডির অনবদ্য উপস্থাপন

সবচেয়ে সুন্দর নারীরা কোথায় বাস করে?

   -তোমার নিজের দেশে। 

প্রথম দেখায় প্রেমে পড়ার আগে আমাদের নায়ক গল্পের কথককে প্রশ্ন করে এই উত্তর পায়। তখন তার ধারণাও ছিলো না সুন্দরী নারীর সংস্পর্শে তার জীবন কিভাবে পুরোপুরি বদলে যাবে!

‘পানির গভীরে গিয়ে চোখ খোলা রেখ, হয়তো হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসার সাথে দেখা হয়েও যেতে পারে।’             রাসূলও তাই করে। স্মৃতি সমুদ্রের ন্যায় বিশাল। এই মুভি হয়তো আপনার স্মৃতির সমুদ্রকেও আন্দোলিত করে দিতে পারে, যদি কখনো কাউকে ভালোবেসে বা হারিয়ে থাকেন।

 Image Source : www.prokerala.com
মুভির নামঅ্যানায়ুম রাসূলুমএর বাংলা অর্থ অ্যানা এবং রাসূল। ১৬৭ মিনিট দৈর্ঘ্যের মালায়ালাম ভাষার এই চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ২০১৩ সালের ৪ঠা জানুয়ারী। পরিচালকরাজীব রাভিএই সিনেমার মাধ্যমে প্রথমবারের মত পরিচালকের চেয়ারে বসলেও লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনের সাথে তার সখ্যতা বহু পুরনো।গুলাল, দেব ডি, গ্যাংস অফ ওয়াসেপুর, নো স্মোকিংএসব ছবিতে সিনেম্যাটোগ্রাফার বা ডিরেক্টর অফ ফটোগ্রাফির কাজ করেছেন। অনুরাগ কাশ্যপের সাথে কাজ করার কারণে বলিউডের পরিচিত মুখ এই ব্যক্তির মলিউডেও কাজ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে। 




রাভির লেখা একটি গল্প থেকে এই সিনেমার চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন সন্তোষ ইচিক্কানাম।সিনেম্যাটোগ্রাফি এবং এডিটিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন যথাক্রমে মাধু নিলাকান্দানএবং বি. অজিতকুমার।সঙ্গীত পরিচালনায় ছিলেন কৃষ্ণ কুমার, যিনি সংক্ষেপে কেনামে পরিচিত। বক্স অফিসে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে এই মুভি। ৪৫ মিলিয়ন রুপির বাজেটের বিপরীতে আয় করেছে ১২০ মিলিয়ন। এটির আইএমডিবি রেটিং ৭.৪ এবং রটেন টমাটোজে অডিয়েন্স রেটিং ৭৮%। স্টিমিং প্ল্যাটফর্ম ডিজনি প্লাস হটস্টারে দেখা যাবে এটি।

Image Source : www.prokerala.com
Image Source : www.indiglamour.com

রাসূল(ফাহাদ ফাসিল)হলো একজন ট্যাক্সি ড্রাইভার।  কেরালার পর্যটন শিল্পের বিকাশের ফলে এটি অশিক্ষিত বা স্বল্প শিক্ষিত তরুণদের জন্য লাভজনক পেশায় পরিণত হয়েছে। তার বড় ভাইয়ের নাম হায়দার(আশিক আবু)।সে কাজ করে ভাইপিন দ্বীপ এবং মূল ভূখন্ডে যাত্রী এবং মালামাল পরিবহনের কাজ করে এমন একটি ফেরীতে। তার একমাত্র ধ্যান-জ্ঞান, মনোযোগ মধ্যপ্রাচ্যে প্রবাসী হওয়ার উপর নিবদ্ধ। কিন্তু তার এই স্বপ্ন বারবার বাধাগ্রস্ত হয়। কেননা সে যখন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করে, তখন পুলিশ তাকে ক্লিয়ারেন্স দেয় না। কেননা অনেক আগে হওয়া একটা দাঙ্গায় জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ তাকে ধরে একবার কিশোর সংশোধনালয়ে পাঠিয়েছিলো। এই ব্যাপার নিয়ে তার হতাশার শেষ নেই৷



রাসূলের বন্ধুদের সাথেও পরিচিত হই আমরা। তারা হলো কলিন(সওবিন শাহীর)এবং আবু(শাইন টম চাকো)।আবুর আবার স্ত্রী (ফাসিলা –শ্রীন্দা)এবং বাচ্চা-কাচ্চাও রয়েছে। তারা এটা-সেটা করে জীবিকা নির্বাহ করে। কোন সংঘবদ্ধ অপরাধচক্রের সাথে জড়িত না হলেও আইন এবং সমাজের চোখে নীতিবিরুদ্ধ বা বেআইনী কাজ করতেও তাদের কোন কাজ করতেও তাদের সমস্যা নেই। রাসূলও মাঝেমধ্যে তাদের এসব কাজে যোগ দেয়। এতকিছুর পরেও আবুকে তার স্ত্রী ফাসিলার খোঁটা শুনতে হয় নিয়মিত৷ নিজের মনে যা আছে তা সরাসরি বলার ক্ষেত্রে ফাসিলাও কোনকিছুকে গা করে না।

Image Source : www.indiglamour.com

অন্যদিকে রাসূল যার প্রেমে হাবুডুবু খায় অর্থাৎ, গল্পের মূল নারী চরিত্র খ্রিস্টধর্মাবলম্বীঅ্যানা(আন্দ্রেয়া জেরেমায়াহ)একটি শাড়ীর দোকানে সেলসগার্লের কাজ করে। স্বল্পভাষী অ্যানার দৈনন্দিন জীবনযাপন চলে ঘড়ির কাঁটা মেপে। মুভির প্রথমার্ধের বেশিরভাগ সময়ই তাকে নির্বাক থাকতে দেখা গেলেও দ্বিতীয়ার্ধে তার চরিত্রের স্বরুপ প্রকাশিত হয়৷ 

গল্পের কথক অ্যাশলি(সানি ওয়েইন)অ্যানার প্রতিবেশী। সে যখন বিদেশ থেকে দেশে ফেরে, তখন ঘটনাক্রমে রাসূলের ট্যাক্সিতে ওঠে। যাত্রাপথে তাদের মধ্যে ভাবের আদান-প্রদান ঘটে এবং তারা একে অপরের বন্ধু হয়ে যায়। দেশ-বিদেশ, জীবন নিয়ে অ্যাশলির বলা কথাবার্তা আমাদের নায়কের ওপর বেশ প্রভাব বিস্তার করে। সে নিজে কিছু করার ব্যাপারে ব্রতী হয়। এভাবেই অ্যাশলির সাথে চলাফেরায় এবং ফেরীতে যাতায়াতের ভেতর তার চোখ পড়ে অ্যানার উপর। সাথে সাথেই তার জীবনের মোড় যেন ঘুরে যায়। অ্যানাকে দেখতেই সে প্রতিদিন প্রয়োজন ছাড়াও ফেরীতে যাতায়াত করে। অ্যানাকে এক নজর দেখবে বলে তাকে অ্যাশলির বাড়ীতে আতিথ্য গ্রহণ করতেও দেখি আমরা। কিন্তু তার সাথে কথা বলার সাহস হয় না রাসূলের। অ্যানার দিকে কেবল তাকিয়েই থাকতে পারে সে। এভাবে আখেরে ফলাফল কি হবে তা না ভেবে রাসূল অ্যানার দিকে এগিয়ে যায়, যেভাবে মথ এগিয়ে যায় আগুনের দিকে।

Image Source : supernalwish.weebly.com

রাসূল আর অ্যানা স্বতন্ত্র কোন ক্যারেক্টার না, তাদের আশেপাশেই এ ধরনের প্রচুর ক্যারেক্টার আছে। মুভির শ্যুটিং হয়েছে দ্বীপ পরিবেষ্টিত কোচিতে। এখানে আমরা যাদেরকে দেখি তার সবাই ব্যস্ত, কারোরই দম ফেলার ফুসরত নেই। এখানকার ক্যারেক্টারদের চারপাশে বিদ্যমান দরিদ্র সামাজিক পরিবেশ এবং কোন ঘটনা ঘটলে তার পরিপ্রেক্ষিতে তারা যেমন আচরণ করে, তা যেন আমাদেরকেচার্লস ডিকেন্সএর বইতে দেখা লন্ডনের কথা স্বরণ করিয়ে দেয়। এরা যেন উপমহাদেশের সেটিংয়ে লেখা চার্লস ডিকেন্সের কোন গল্প থেকে উঠে এসেছে। 



এই মুভির দুটি জায়গায় খামতি রয়েছে। যেমন : পুরো গল্প আমরা শুনি কথক অ্যাশলির জবানীতে। কিন্তু অনেকক্ষেত্রেই ঘটে যাওয়া নানা ঘটনার সময় সে সেখানে উপস্থিত থাকে না এবং এসব ঘটনা সম্পর্কে তার জানারও কথা না৷ সে এসব ঘটনা কিভাবে জানতে পারে তার ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি৷ তাই সে কিভাবে পুরো মুভিতে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলী সম্পর্কে জানে তা নিয়ে দর্শকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে। এছাড়া বলিউড বা অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রির বাণিজ্যিক ধারার চলচ্চিত্রগুলোতে ‘স্টকিং’ বা উত্তপ্ত করাকে ভালোবাসা হিসেবে দেখাতে চাওয়ার যে প্রবণতা, সেটি এখানেও বিদ্যমান। রাসূলের আচার-আচরণ এবং অভিব্যক্তি পঙ্কিলতায় ভরা না হলেও উত্তপ্ত করাকে এখানে নরমালাইজ করা হয়েছে৷ এ ব্যাপারে দর্শকদের সতর্ক থাকা উচিত।

Image Source : mobile.twitter.com

এই দুটি দিক ছাড়াও আরো একটি কারণে এই মুভির ক্লিশে হয়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা ছিলো। সেটি হলো দিনশেষে এখানেও দুইজন ভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের প্রেমের কাহিনীই দেখানো হয়েছে, যা হয়তো রুপ নেবে কমেডি অথবা ট্র্যাজেডিতে। এই ধরণের সিনেমা দর্শকরা বহুকাল ধরেই রুপালি পর্দায় দেখে আসছে৷ ‘অ্যানায়ুম রাসূলুম কি এমন স্পেশাল কিছু অফার করে যার জন্য এই মুভি দেখতে হবে?’ এই প্রশ্ন মানুষের মনে জাগাটা স্বাভাবিক। আর ঠিক এই জায়গাটাতেই মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন রাভি আর তার পুরো ক্রু। 



মুভির কাহিনী অনুপ্রাণিত হয়েছে শেক্সপিয়রের অমর নাটক ‘রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট’থেকে। এখানে আমরা প্রেমের মিষ্টতা, প্রেমিক-প্রেমিকার খুনসুটি, হিরোর ম্যাচোইজম এবং শেষদিকে ছবির মত সুন্দর কোন জায়গায় তাদেরকে নাচতে-গাইতে দেখি না। শেক্সপিয়রিয়ান ট্র্যাজেডির সকল বৈশিষ্ট্যই এখানে উপস্থিত। তবে অ্যানায়ুম রাসূলুমের আসল সৌন্দর্য এটির গল্পের ব্যাকড্রপে। বাস্তবতা এখানে কোন মিথ নয় বরং তা সর্বত্রই বিরাজমান। মূল দুই চরিত্রই নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেনীর মানুষ। এই দুইজনের সম্পর্ককে কতটা টানাপোড়নের ভেতর দিয়ে যেতে হয় তা পরিচালক ফুটিয়ে তুলেছেন খুব সুন্দরভাবে। এটি এমন একটি লাভ স্টোরি যার সাথে সবাই নিজেদের এবং তাদের আশেপাশের মানুষের জীবনের ঘটনাকে মেলাতে পারে।

Image Source : mobile.twitter.com

এই গল্পের কাহিনী আবর্তিত হয়েছে কোচি শহরের পটভূমিতে আর গল্প বলার ক্ষেত্রে পরিচালক এই শহরকে ব্যবহার করেছেন অনবদ্যভাবে। অ্যানা আর রাসূল মূল ফোকাসে থাকলেও পরিচালক কোচির মানুষ এবং তাদের দৈনন্দিন সংগ্রামকেও তুলে এনেছেন স্ক্রিনে। কোচি গড়ে উঠেছে এটির আশপাশের কিছু দ্বীপকে নিয়ে, যা আগেই বলা হয়েছে। এসব দ্বীপে আসা-যাওয়ার জন্য যেসব ফেরী ব্যবহৃত হয়, সেগুলোই হয়ে গিয়েছে অ্যানা আর রাসূলের প্রেম করার জায়গা। এর পেছনে মূল কারণ রাসূলের অ্যানাকে সাহস করে কিছু বলতে না পারা এবং উপমহাদেশে ডেটিংকে ট্যাবু হিসেবে দেখা। 



পরিচালক মার্টিন প্রাক্কাটএর চার্লিমুভিতে আমরা কোচির নান্দনিক এবং দৃষ্টিসুখকর দিকগুলো দেখেছি। তার তুলনায় এখানে এই শহর অনেক বেশি কর্মচঞ্চল। মাছের বাজার থেকে দোকানপাট বা আবাসিক এলাকায় কর্মব্যস্ত মানুষজনের গায়ে জড়িয়ে আছে নীল, ধূসর, বাদামী বা সবুজ রংয়ের বৈশিষ্ট্যহীন কাপড়-চোপড়। এদের মধ্যে কেবল গোলাপী বা হলুদ রংয়ের শাড়ী পরা অ্যানাকেই আমরা আলাদা করতে পারি। এক দৃশ্যে অ্যানা রাসূলকে তার ডিউটি শেষ হওয়ার পর দেখা করতে বলে। তার পরের দৃশ্যে আমরা ব্যস্ত সড়ক দেখি বার্ডস-আই ভিউতে, যেখানে উভয়েই ভীড় ঠেলে পরস্পরের সাথে দেখা করতে আসছে। এখানে হলুদ শাড়ী পরা অ্যানাকে আমরা খুব সহজে চিহ্নিত করতে পারি কিন্তু রাসূল হারিয়ে যায় চারপাশের হুড়োহুড়িতে।

অ্যানায়ুম রাসূলুম
Image Source : www.onmanorama.com

ইন্ডোরে যেসব দৃশ্য ধারণ করা হয়েছে তার বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই ক্যামেরা ছিলো পর্দার অন্তরালে বা কোন দেয়ালের কোণায়। যার ফলে এখানকার চরিত্রদের ওপর প্রতিনিয়ত কেউ নজর রাখছে টাইপের ফিল এসেছে। বিশেষ করে অ্যানাকে আমরা পর্দার অন্তরাল থেকেই বেশি দেখি। একাকিত্ব, নৈশব্দ এবং অসহায়ত্বের দৃশ্যগুলোকে আরো প্রকট হয়েছে মূল চরিত্রদের আশেপাশে অবস্থান করা মানুষজনের কথোপকথনে, যেসব কথোপকথনে তারা অংশ নেয় না৷ যেমন : অ্যানা যখন ফেরীতে বসে রাসূলকে মেসেজ পাঠাবে নাকি পাঠাবে না এটা নিয়ে ভাবছে, তখন তার প্রতিবেশী পাশে বসে ফেরীর মালিকের সাথে ভাড়া নিয়ে ঝগড়া করে। রাসূলের ক্ষেত্রে আমরা দেখি সে যখন অ্যানার মেসেজের উত্তর দিচ্ছে, তখন ঘরের মধ্যে কেবল টেলিভিশনে চলমান খবরের শব্দই শোনা যায়। 



ফ্রান্সিসনামে একটা ক্যারেক্টার আছে মুভিতে, যে অ্যানাকে বিয়ে করতে চায়। যখন সে আর তার মা বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে বাসায় আসে, তখন আমরা দেখি অ্যানা তাদের জন্য চা বানাচ্ছে। এসময় ফ্রান্সিসরা যে পাশের ঘরে তার বাবার কাছে বিয়ের ব্যাপারে প্রস্তাব দেয় তাও সে শুনতে পায়। এই ব্যাপারগুলো উপমহাদেশে খুবই সাধারণ ঘটনা, আমরা আশেপাশে প্রতিনিয়তই এসব দেখে অভ্যস্ত। এসব ব্যাপার স্ক্রিনে মুভিটিকে আরো বেশি জীবন্ত, স্বতঃস্ফূর্ত এবং বাস্তবিক করে তুলেছে। এই মুভিতে চমৎকার সিনেম্যাটোগ্রাফি করার ফলাফল হিসেবে মাধু নিলাকান্দান জিতে নিয়েছেন স্টেট অ্যাওয়ার্ডও। রাভি যে অনেকটা সময় অনুরাগ কাশ্যপএর সাথে কাটিয়েছেন তাও প্রতিফলিত হয়েছে এখানে। ন্যাচারাল সার্কাস্টিক জোক, শহুরে এলাকার দৃশ্যায়নের ক্ষেত্রে রাফ ক্যামেরা ওয়ার্ক এবং আনকোরা ফ্রেমিং আর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের ইউনিক ব্যবহার, যা কাশ্যপের মুভিতে দেখা যায়; সেগুলো এখানেও উপস্থিত।

Image Source : m.timesofindia.com

নিজেদের চরিত্রে কাস্টের সবাই ছিলেন অনবদ্য। অ্যানার প্রথমদিকের রক্ষণশীলতা আর পরে রাসূলের প্রতি টানের কারণে সব বাধা পেছনে ফেলার যে মেন্টালিটি তার প্রকাশে আন্দ্রেয়া ছিলেন অনবদ্য। আর এই সিনেমায় ফাহাদের পার্ফম্যান্স তার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা৷ কোন ডায়লগ ছাড়া কেবল চোখ আর অভিব্যক্তি দিয়ে ভেতরের আনন্দ, বেদনা, মুগ্ধতা,ইনসিকিউরিটি ইত্যাদি ভাব প্রকাশের যে দিকটি ছিলো রাসূলের ক্যারেক্টারে, তাতে তিনি পাশ করেছেন ফ্লাইং কালার নিয়ে। এই যে ডায়লগ ছাড়া শুধু অভিব্যক্তি দিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করা, এইসব ক্ষেত্রে তার পার্ফম্যান্সের মাহাত্ম্য বলে বা লিখে বোঝানো সম্ভব না। এজন্য মুভিটি দেখতে হবে। তখনকার সময়ে এমনসব চরিত্রে এরকম পার্ফম্যান্স দেখাতে পেরেছিলেন বলেই আজকে তাকে নিয়ে এতটা আলোচনা হয়৷ 

আপনি যদি কমার্শিয়াল রোমান্টিক মুভি দেখে অভ্যস্ত হন, তাহলে এই মুভি আপনার জন্য না। বিশাল, ডিটেইলড চিত্রনাট্য এই মুভির ডাউনসাইডগুলোর একটা। এটি উপভোগ করতে গেলে আপনাকে অবশ্যই সময় এবং মনোযোগ দিতে হবে। তা না হলে মাঝপথে মুভি ছেড়ে উঠে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

Total
0
Shares
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous Article

দ্যা ইয়েলো সী (২০১০) : পরাজিত মানুষের ক্রোধের আখ্যান

Next Article

মাত্থু ভাডালারা (২০১৯) : সাসপেন্স আর হিউমারের চমৎকার ব্লেন্ডে নির্মিত উপভোগ্য একটি ট্রিপি থ্রিলার

Related Posts

কন্সপিরেসি থিওরিষ্টদের চোখে ‘এরিয়া ৫১’

সূচিপত্র Hide তাহলে কি হয় এরিয়া-৫১ এর ভিতরে?এখানে এলিয়েন স্পেসক্রাফট বানানো হয়এলিয়েনদের আটকে রাখা হয়েছে এখানেনীল আর্মস্ট্রংয়ের চাঁদে…

কিউএ্যানন এবং মার্কিন কংগ্রেস ভবনে হামলার ইতিহাস

গণতন্ত্র এবং পুঁজিবাদের আদিভূমি বলা হয় যুক্তরাষ্ট্রকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদারনৈতিক গণতন্ত্র চর্চা বিশ্বের যেকোনো দেশের জন্য অনুকরণীয়। বিশ্বের…

দেশে দেশে বোরকা ও আযান নিষিদ্ধের গল্প

পাশ্চাত্যের উদারপন্থী মূলনীতিগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে নারীবাদ বা নারী স্বাধীনতা। অর্থাৎ নারী যা খুশি তাই করতে পারবে। পুরুষতান্ত্রিক…

যেভাবে আমেরিকা পরিণত হলো বৈশ্বিক সুপার পাওয়ারে (পর্ব -২) : (ব্রেটন উডস কনফারেন্স থেকে বর্তমান)

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরই মূলত বিশ্বজুড়ে আমেরিকার প্রভাব স্থায়ী রুপ লাভ করে। ১৯৪৫ সালে ২৪শে অক্টোবর ৫১টি দেশের অংশগ্রহণে…

আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন

Total
0
Share