লিখুন
ফলো

ওয়ান্ডাভিশন: সিটকমের আড়ালে রহস্যঘেরা ব্যতিক্রমী এক সুপারহিরো সিরিজ

(এই রিভিউতে ওয়ান্ডাভিশন সিরিজের বেশ কিছু মূল ঘটনা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাই সিরিজটি না দেখে থাকলে স্পয়লারের ভয় থাকছেই)

দেশজুড়ে যুদ্ধ, জীবন আর মৃত্যু যেন খেলা করছে পার্কের কোণের সিসোতে। চারপাশের সহিংসতা ভুলে থাকার উপায় যেন চারকোণা জাদুর বক্সটি। তাতে দেখানো মিথ্যা হাসির ফুলঝুড়িতে জীবনকে নিষ্ঠুর বাস্তবতা থেকে থেকে দূরে রাখাটা সাময়িক সমাধান মনে হলেও তাতে বেঁচে থাকার আশাটা নিতান্তই অকল্পনীয়। আর সেই আশাকেই বাস্তব করে শুধু স্মৃতিটুকুই আঁকড়ে ধরে নিজের সব দুঃখ শোক ভুলে যেতে ওয়ান্ডা ম্যাক্সিমফ সৃষ্টি করে নিজের আলাদা এক সিটকম জগত। কিন্তু স্বার্থপর এই সৃষ্টি কি কখনো এনে দিতে পারে নিজের সবশেষ চাওয়াটা?

মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের নতুন সংযোজন এই ওয়ান্ডাভিশন সিরিজটির শুরু, প্রতিশ্রুতি দিচ্ছিল ভিন্নতার। দর্শকদের নস্টালজিক করে তুলতে শুরুর প্রতিটি পর্বই নির্মাণ করা হয়েছে ভিন্ন দশকের সিটকমের আদলে।

ঠিক যেন সেই সময়ে হুট করে চলে গিয়ে চারকোণা জাদুর বক্সের মধ্যেই নিজের নতুন জীবন শুরু করে ওয়ান্ডা ম্যাক্সিমফ (এলিজাবেথ ওলসেন)। আর আমরা সেই বক্সের বাইরে বসে ঠিক মেলাতে পারছিলাম না কী হচ্ছে এসব! কী করে সব হারানো ওয়ান্ডা হঠাৎ করে চলে গেল ৬০ এর দশকের সাদাকালো সিটকমের দুনিয়ায়? কিভাবে সে আবার খুঁজে পেল তার ভালোবাসার ভিশনকে? রহস্যের বরফ গলতে সময় নিলেও এই সিরিজটির প্রথম তিন পর্ব যেন মার্ভেল স্টুডিওর এই পর্যন্ত করা সেরা কাজগুলোর একটি। পেছনে মানুষের হাসির কলরোল শোনা গেলেও পরিবেশে ছিল কেমন একটি অস্বস্তিকর রহস্যের আভাস। প্রথম এপিসোডের ডিনার টেবিলে ভিশনের বস গলায় খাবার আটকে মরতে বসলেও তার স্ত্রীর তাকে হাসতে হাসতে থামতে বলার মধ্যে ছিল ভয়। আস্তে আস্তে আমরা বুঝতে পারি পুরো ওয়েস্টভিউ শহরের সবাই যেন কারো হাতের পুতুল, সবাই চলছে তার কথামত।



এমন পরিবেশ সৃষ্টি করে দর্শকের ধাঁধায় ফেলার কাজটি খুব চমৎকারভাবেই সম্পন্ন করেছে সিরিজটির নির্মাতারা। যারা প্রথমদিক থেকেই সিরিজটির গল্পের ব্যাপারে সন্দিহান ছিলেন তারাও মেনে নেন সুন্দরভাবেই এগোচ্ছে গল্প। সাদাকালো থেকে রঙ্গিন পর্দায় জীবন শুরু করা বা জমজ সন্তানের মা হওয়াটা নিঃসন্দেহে সিটকমের ওয়ান্ডাকেই পরিপূর্ণতা দিচ্ছিল। তবে আমাদের মতই সবকিছু নিয়ে প্রশ্ন জাগতে শুরু করে হঠাৎ করে ফিরে আসা ভিশনের মনেও। তার নেই আগের জীবনের কোন স্মৃতি, সে জানে না ঠিক কিভাবে সে খুঁজে পেয়েছিল ওয়ান্ডাকে।

ওয়ান্ডাভিশন
৬০ এর দশকের সিটকমের জগতে ওয়ান্ডা এবং ভিশন, Image Source: Disney/marvel

তবে যখনই মনে হচ্ছিল গোলকধাঁধা থেকে আমাদের বের না করে শুধু চক্রাকারে ঘোরানো হচ্ছে তখনি আমরা চতুর্থপর্বে প্রথমবারের মত সিটকম জগতের বাইরের রূপ দেখতে পাই। সেটাও বিভীষিকা থেকে কম ছিল না থ্যানোসের বিখ্যাত ‘স্ন্যাপের’ পাঁচ বছর পর ফিরে মানুষদের কাছে। মনিকা রেম্বৌ, যাকে আবার নতুন করে মার্ভেল এই সিরিজের মাধ্যমেই পরিচয় করিয়ে দিয়েছে, সেও ফিরে আসা মানুষদের মধ্যে একজন। তার মাধ্যমেই আমরা প্রথমবারের মত জানতে পারি ওয়ান্ডা ম্যাক্সিমফ ওয়েস্টভিউ শহরের সবাইকে তার ‘হেক্স ম্যাজিকের’ মাধ্যমে বন্দি করে তার নিজের বানানো সিটকমে অভিনয় করতে বাধ্য করছে। সেই শহরের সবাইকে উদ্ধারে দৃশ্যপটে আগমন ঘটে জিমি উ, ডার্সি লুইস এবং সোর্ডের পরিচালক টাইলার হেওয়ার্ডের।

একেবারে শেষ এপিসোডের আগ পর্যন্ত সিরিজটি যা দেখাতে বা বোঝাতে চেয়েছে যে ওয়ান্ডা ম্যাক্সিমফ মানসিক আঘাতের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তবে সেটা ঠিক কেন তা একেবারে পুরোপুরি বর্ণনা করা হয় অষ্টম এপিসোডে। যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশে বেড়ে উঠার সময় বাবা-মায়ের সাথে সিটকমের মাঝে শেষ হাসিটা খুঁজে পায় ওয়ান্ডা। আমেরিকানদের সিটকম উপভোগের সময়তেই আমেরিকানদের হামলায় ওয়ান্ডা হারায় তার মা-বাবাকে।

পরিবারের সাথে সিটকম উপভোগের মুহুর্ত,  Image Source: Disney/marvel

এরপর শুধু হারিয়েই চলেছে আপনজনদের। এই জায়গায় এসে মনে হচ্ছিল ওয়ান্ডাভিশন সিরিজটি সফল কারণ এটি ওয়ান্ডার ব্যাক্তিগত উত্থান এবং পতনের মধ্য দিয়েই নিয়ে যাচ্ছে আমাদের। আমরা নিজেরাও বুঝতে পারছিলাম ওয়ান্ডার মনের মধ্যে কী হচ্ছিল। প্রথমে মা-বাবার মৃত্যুর পর তার সাথে ছিল ভাই পিয়েত্রো। ভাই মারা যাওয়ার পর একাকী সময়ে সে ভালোবাসা খুঁজে পায় ভিশনের মাঝে। কিন্তু ইউনিভার্সকে এক উন্মাদ দানবের হাত থেকে বাঁচানোর শেষ চেষ্টা হিসেবে সে নিজের হাতে বিসর্জন করে ভিশনকে। কিন্তু তাকে আবার ফিরিয়ে এনে আবার হত্যা করা হয় তার চোখের সামনেই। এরপর থেকে সম্পূর্ণই একাকী হয়ে যায় ওয়ান্ডা। এদিকে তার চোখের সামনেই ভিশনের খন্ড বিখন্ড শরীরকে পরিণত করা হচ্ছিল ভয়ানক অস্ত্রে। ভিশনের কপালের যেখানে মাইন্ডস্টোন ছিল, সেখানে হাত দিয়েই ওয়ান্ডা বুঝতে পারে তার ভিশনের কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। ভিশনের সাথে ওয়েস্টভিউ শহরের এক কোণে ঘর বাঁধার স্বপ্নটা অধরাই থেকে যায়। এতকিছু আর নিতে পারেনি ওয়ান্ডা। তাই সে নিজেই নিজের জন্য সৃষ্টি করে নতুন এই জগত যেখানে থাকবেনা প্রিয়জনকে আর হারানোর ভয়। সে তখন আর ভাবেনি কোন কিছু নিয়েই। তবে তার এই ক্ষমতা আকৃষ্ট করে তাদেরকেই যাদের এই গল্পের অ্যান্টাগনিস্ট হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।

ঠিক এই জায়গাটাতেই প্রথমবারের মত হোঁচট খায় সিরিজটি। প্রধানত অ্যাগনেস বা আগাথা হার্কনেস আর হেওয়ার্ড এবং তার সাদা ভিশনকে সিরিজের খলনায়ক হিসেবে তুলে ধরলেও সিরিজটির একেবারে শুরু থেকেই খলনায়ক মনে হবে ওয়ান্ডাকেই। প্রথমত সে গোটা একটি শহরকেই জিম্মি করে তাদেরকে তার কথামত চলতে বাধ্য করে শুধুমাত্র নিজের শোক ভুলে থেকে একটি হাসিখুশী জীবন পেতে। আর দ্বিতীয়ত, ওয়ান্ডার বিশ্বাস ছিল সে যেটা করছে সেটা করছে সেটা সে ঠিকই করছে আর সবাই বেশ শান্তিতেও আছে। কিন্তু না! পুরো ওয়েস্টভিউয়ের বাসিন্দারা বাস করছিল এক অসহনীয় যন্ত্রণার মধ্যে। সিরিজের শেষ এপিসোডের এক পর্যায়ে একজন এটাও বলে যে, “আমাদের তুমি যদি মুক্ত না করো, তাহলে অন্তত মরতে দাও”। অথচ একেবারে শেষ মুহুর্তে যখন ওয়ান্ডা ওয়েস্টভিউ শহর থেকে চলে যাচ্ছিল তখন মনিকা রেম্বৌ বলে, “তারা কখনো জানবে না তুমি তাদের জন্য কত বড় ত্যাগ করেছো”। এখানে ওয়ান্ডার ত্যাগের প্রশ্ন আসবেই না কারণ সে ওয়েস্টভিউবাসীদের কাছ থেকে যা নিয়েছিল কেবল তাই ফেরত দিয়েছে। এতদিন সে নিজের ব্যক্তিগত কারণেই এতগুলো মানুষের ইচ্ছাশক্তি নিজের হাতে নিয়ে রেখেছিল সে। মনিকা রেম্বৌর এই সংলাপটি শুনে মনে হবে ওয়ান্ডার হেক্স ম্যাজিকের মন্ত্রে পড়েছে সিরিজের লেখকরাও। 

এই পর্যায়ে শেষ এপিসোড নিয়ে কথা না বললেই নয়। আট এপিসোড পর্যন্ত সিরিজটি যে অসাধারণভাবে গড়ে তোলা হচ্ছিল তা নিতান্তই সাধারণ হয়ে পড়ে শেষে এসে। গতানুগতিক অন্যান্য সুপারহিরো বা একশন সিনেমার মতই একটি ফাইট সিনের মাধ্যমে সিরিজটির সমাপ্তি টানা হয়। পাশাপাশি শেষে অন্যান্য চরিত্রদের খুবই কম ভূমিকা থাকায় তাদের উপস্থিতিও বেশ প্রশ্নবিদ্ধ। যেমন প্রথমদিকে এন্ডগেম পরবর্তী মনিকা রেম্বৌ আর ওয়ান্ডার মধ্যে নিজেদের প্রিয়জন হারানোর শোকের মাধ্যমে তাদের মিল তুলে ধরা হয়। কিন্তু শেষদিকে গল্পে তেমন কোন প্রভাব না থাকায় মনে হতে পারে শুধুমাত্র সুপারহিরোতে পরিণত হতে আর পরবর্তি মার্ভেল সিনেমাগুলোর সাথে সিরিজটির সংযোগ স্থাপন করতে মনিকা রেম্বৌ চরিত্রটিকে নিয়ে আসা হয়েছে।

মনিকা রেম্বৌ পেয়েছে তার নতুন সুপারপাওয়ার, Image Source: Disney/marvel

মূল গল্পের শুরুতে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে তুলে ধরলেও শেষ পর্যায়ে ডার্সি লুইসের কথা বেমালুম ভুলে যায় লেখকেরা। একই বিষয়ে কথা বলা যায় নকল পিয়েত্রো বা ‘রালফ বোনার’ চরিত্রটি নিয়েও। খুবই আকর্ষণীয় ভাবে তাকে সিরিজে নিয়ে আসলেও তার আসল পরিচয় প্রকাশ করা হয়েছে খুবই নিন্মমানের কৌতুক ব্যবহার করে। এই বিষয়টি এতটা খারাপও লাগত না যদিনা এই চরিত্রে এক্স-ম্যান ইউনিভার্সের পিয়েত্রো বা কুইকসিলভার পিটার ইভান্সকে না নেয়া হত।

সিরিজটির প্রাণ বলা যেতে পারে এলিজাবেথ ওলসেনের অসাধারণ অভিনয়। প্রতিটি দৃশ্যেই তিনি তার সবটুকুই দেয়ার চেষ্টা করেছেন। সিটকম জগতের স্ত্রী কিংবা জমজ সন্তানের মা, সুপারহিরো কিংবা একজন উইচ, দৃশ্যের প্রয়োজনে বারবার পাল্টিয়েছেন নিজের রূপ। তবে অষ্টম এপিসোডে তার অসহনীয় দুঃখের স্মৃতিতেও ছিলেন তিনি সাবলীল। পল বেটানিও ছিলেন দূর্দান্ত। তাদের দুজনের মুহুর্তগুলো সিরিজের সেরা কিছু মুহুর্ত ছিল। বিশেষ করে ফ্ল্যাশব্যাক দৃশ্যে আসলে আমরা বুঝতে পারি ঠিক কেন এবং কখন দুজনের মধ্যে ভালোবাসা জন্ম নেয়। ভিশনের বলা “What is grief, if not love persevering?” গোটা মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সেরই অন্যতম সেরা সংলাপ ছিল। মূলত পুরো সিরিজটি গড়ে উঠেছে ওয়ান্ডার জীবনে দুঃখ আর শোকের কারণেই। শেষ এপিসোডেও পুরো পরিবার একসাথে লড়াই করার সময়টাও ছিল বাতাসে ঘুষি ছুড়ে উদ্যাপন করার মত মুহুর্ত। কিন্তু একটু পরেই শূন্যতা অনুভূত হয় যখন বুঝতে পারি ওয়ান্ডার জাদুর দুনিয়ার বাইরে তাদের কোণ অস্তিত্ব নেই। তবে সেই আশংকা কতটুকু সত্য তা হয়তো আমাদের বলবে ডক্টর স্ট্রেঞ্জ মাল্টিভারস অব ম্যাডনেস সিনেমাটি।

এলিজাবেথ ওলসেন সবাইকে মুগ্ধ করেছেন তার অভিনয়ের মাধ্যমে, Image Source: Disney/marvel
আরো পড়ুনঃ

দ্যা ম্যান্ডালোরিয়ান সিজন ২ঃ কেমন ছিল বেবি ইয়াডাকে নিয়ে ডিন জারিনের নতুন অ্যাডভেঞ্জার ?

জীবন বিক্রি তারপর ইচ্ছাপূরণের গল্প

চলুন আপনাকে ক্রিকেট শূন্যের কিছু গল্প বলি

ক্রিকেট বহুল প্রচলিত ব্যতিক্রমি সব শব্দ আর তাদের অর্থ

নজর কেড়েছেন ক্যাথেরিন হানও তার অ্যাগাথা হার্কনেস চরিত্রটির মাধ্যমে। একেবারে প্রথম এপিসোড থেকেই যখন অ্যাগাথা ওয়ান্ডার দরজায় কড়া নাড়ে, তখন সেই তার প্রশংসায় সবাই মূখর ছিল। তার সংলাপ বলার ভঙ্গি একশন ভিলেইন হিসেবে ছিল দেখার মতই। আমার মনে পড়ে না শেষ কবে এমন কাউকে দেখেছিলাম যে সিনেমার দুষ্ট চরিত্রটি কেবল হাস্যোজ্জল সংলাপের মাধ্যমেই এতটা আকর্ষণীয় করে তুলতে পেরেছে। একেবারে শেষ দৃশ্যের কথা না বললেই নয় যেখানে সে ওয়ান্ডার হাতে পরাজিত হয়ে আবার তার আগের চঞ্চল প্রতিবেশীর রূপে ফিরে যায়। মূল ভিলেইন হিসেবে তার অভিনয়ই বলে দিচ্ছে সামনের দিনগুলোতে তাকে আমরা আবারও অ্যাগাথা হিসেবে দেখতে পাব।

ক্যাথেরিন হান, এগাথা হার্কনেস হিসেবে, Image Source: Disney/marvel

আগাথা হার্কনেসের চরিত্রটি যতটা ভালোভাবে সিরিজে দেখানো হয়েছে তাতে মোটামুটিভাবে ভিলেইনের চাহিদা মিটিয়ে নেয়া যেত। হার্কনেস বাদে আরেক ভিলেইন টাইলার হেওয়ার্ড চরিত্রে কে ছিলেন তা জানতে মানুষ আগ্রহী হবে না কারণ  নিঃসন্দেহে তিনি জায়গা করে নিবেন মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের অন্যতম বাজে ভিলেইন হিসেবে। তার চরিত্রটি কেন এমন তার ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি। এমন কী তার কাজ ছিল গতানুগতিক অন্যান্য ভিলেইনদের মতই। তিনি ভিশনকে আবার জীবিত করে একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছেন যে একই কাজ করেছে ডিসি ইউনিভার্সের লেক্স লুথর জেনারেল জডের মৃতদেহ নিয়ে, আবার এলিয়েন রিজারেকশন সিনেমাতেও একই কাজ করা হয়েছে রিপলিকে নিয়ে। ভিলেইন হিসেবে তার মোটিভ এখনো অজানা। হয়ত এইজায়গাতে নিকট ভবিষ্যতে তাকে একজন স্ক্রাল হিসেবে তুলে ধরে সিক্রেট ইনভেনশন সিরিজে সেটার ব্যাখা দেয়া হবে। সোর্ড প্রতিষ্ঠানটিকেও অনেকটাই আগের শিল্ডের মত করেই দেখানো হচ্ছে। এযেন জর্জ লুকাসের বলা “It’s like poetry, It rhymes” মত একই পন্থা অনুসরণ করছে মারভেল।



সিরিজটির শেষ এপিসোডের হতাশা স্মৃতি থেকে বাদ দিলে অসাধারণ এক অভিজ্ঞতাই বলতে হবে পুরো ওয়ান্ডাভিশন টিমের জন্যেই। তারা ক্লাসিক সিটকমের মত একই রকম স্টেজ এবং ক্যামেরা সেট করে একই পদ্ধতিতেই ৬০ এর দশক থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত বেশ কিছু সিটকমের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছে। এই সিরিজের সিজিয়াই নিয়েও কারো কোন আপত্তি থাকার কথা নয়। প্রোডাকশন টিম এবং কস্টিউম ডিজাইনারদেরকেও বেশ খাটতে হয়েছে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে। 

সিরিজের সমাপ্তির গল্প কিছুটা এখনো বোধগম্য হয়নি। আশা করা যায় যেসব প্রশ্ন জন্ম নিয়েছে তার উত্তর পাওয়া যাবে ডক্টর স্ট্রেঞ্জ মাল্টিভার্স অব ম্যাডনেস সিনেমাতে। এই সিরিজ অবশেষে মার্ভেল কমিকসের জনপ্রিয় চরিত্র স্কারলেট উইচকে তার নাম ব্যবহারের সূযোগ করে দিয়েছে। সাথে দিয়েছে অসাধারণ একটি কস্টিউম। কমিক থেকে ভিন্ন হলেও এটি নিয়ে আপত্তি করার কোন সূযোগ নেই। ভিশন চরিত্রটিও যে আবার ফিরে আসবে এটা এক প্রকারের নিশ্চিত বলা যায়। তো সবমিলিয়ে বলতে হয়, মার্ভেল খুব অসাধারণ চেষ্টা করেছে তাদের প্রথম সিরিজটির মাধ্যমে ভক্তদের এক বছরের ক্ষুধা নিবারণ করতে। অল্প সময়ের ব্যবধানেই এখন থেকে আমরা বেশ কিছু সিরিজ এবং সিনেমা পেতে চলেছি মার্ভেলের পক্ষ থেকে। এত বেশি কিছু পাওয়ার মধ্যে যেমন আনন্দ আছে তেমনি ভয়ও আছে যদিনা সেটার মান কমে যায়। তবে মার্ভেল এই সিরিজটির মাধ্যমে জানিয়ে দিল, তারা বারবার চমক নিয়েই হাজির হবে।

This is a Bangla article. Here, everything is written about “WandaVision” series.

All links are hyperlinked.

Featured image taken from Disney/Marvel

Total
0
Shares
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous Article

জীবাশ্ম সম্পর্কে কি জানি আমরা?

Next Article

মস্তিষ্কের বয়স কমানোর উপায়

Related Posts

মোসাদ: বিশ্বের সবচেয়ে দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা-১ম পর্ব

প্রাচীন ভারতের মৌর্য সাম্রাজ্যের রাজ-পরামর্শক কৌটিল্যের একটি নীতি বাক্য ছিল। আর তা হলো, ‘প্রতিপক্ষকে ধ্বংস করে দাও, দরকার…

কখনো আসেনি (১৯৬১) : পরিচালনায় জহির রায়হান নামক জিনিয়াসের আবির্ভাব

জহির রায়হান নামটি আমাদের জন্য চির আক্ষেপের। যতগুলো অনন্য কাজ তিনি করেছেন, সেগুলোর চেয়েও বেশি আলোচনা হয় তিনি…

বয়েজ অ্যান দ্যা হুড (1991) : আমেরিকান পপ কালচার বদলে দেয়া কামিং-অফ-এইজ ফিল্ম

বয়েজ অ্যান দ্যা হুড (১৯৯১) একটি আমেরিকান কামিং-অফ-এইজ হুড ড্রামা ফিল্ম। হুড ফিল্ম বলতে ঐ জনরাকে বোঝানো হয়…

ডু দ্যা রাইট থিং (1989) : স্পাইক লির ম্যাগনাম ওপাস যা তিন দশক পর এখনও প্রাসঙ্গিক

“কি রকম গরম পড়ছে দেখতে পাচ্ছো? এরকম গরম পড়লে তো দুই গোলার্ধের বরফসহ পুরো দুনিয়াই গলে যাবে!”  স্যাল’স…

আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন

Total
0
Share