লিখুন
ফলো

করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য হাত ধোয়া সম্পর্কে কিছু তথ্য

যখন ভাইরাস ধারণকারী মিউকাস আপনার চোখ, নাক বা গলার মাধ্যমে আপনার শরীরে প্রবেশ করে তখন ভাইরাস সারা দেহে ছড়িয়ে পড়ে। প্রায়ই, ভাইরাস সহজেই এক ব্যক্তি থেকে অন্য হাতে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

বিশ্বব্যাপী মহামারীর সময় করোনাভাইরাস হাত থেকে প্রতিরোধের  সবচেয়ে সস্তা, সহজ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপায় হল সাবান এবং পানি দিয়ে ঘন ঘন হাত ধোয়া।



ইউনিসেফের তথ্য মতে কিভাবে সঠিক উপায়ে হাত ধুতে হয় সে সম্পর্কে আপনার যা জানা প্রয়োজন তা এখানে তুলে দেওয়া হল:

১. সঠিকভাবে হাত ধোয়াঃ

করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। নীচে হাত ধোয়ার জন্য কার্যকর একটি প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে দেওয়া হল।

প্রথমে হাত পানিতে ভেজাতে হবে। পরে সাবান দিয়ে ভালো করে হাতের সমস্ত পৃষ্ঠ ঘষতে হবে। হাতের পিছনে, আঙ্গুল এবং নখের নিচে – কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে ধুতে হবে। এর পর ভালো করে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। এরপর একটি পরিষ্কার কাপড় বা তোয়ালে দিয়ে হাত শুকাতে হবে।

২. হাত ধোবার বিকল্প পদ্ধতিঃ

সাবান দিয়ে অন্তত ২০-৩০ সেকেন্ড হাত ধুতে হবে। হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। এমন স্যানিটাইজার ব্যবহার করবেন যাতে কমপক্ষে ৬০% অ্যালকোহল থাকে। স্যানিটাইজার দিয়েও কমপক্ষে ২০ সেকেন্ডের জন্য হাত ঘষতে হবে।



৩. হাত ধোবার সময়ঃ

নাক, কাশি বা হাঁচি দেওয়ার পর , গণ পরিবহন, বাজার এবং উপাসনাস্থল সহ একটি পাবলিক স্পেস পরিদর্শনের পর , বাড়ির বাইরে পৃষ্ঠ স্পর্শ করার পর, অসুস্থ ব্যক্তির দেখাশোনা করার আগে, সময় এবং পরে , খাওয়ার আগে এবং পরে , টয়লেট ব্যবহার করার পর , আবর্জনা পরিষ্কারের পর , পশু ও পোষা প্রাণী স্পর্শ করার পর , শিশুদের ডায়াপার পরিবর্তন বা শিশুদের টয়লেট ব্যবহার করতে সাহায্য করার পর ।

৪. সন্তানকে হাত ধুবার অভ্যাসঃ

আপনি আপনার সন্তানকে মজার কিছুর মাধ্যমে খুব সহজেই হাত ধোবার অভ্যাস করতে পারেন। তাকে সুন্দর করে বুঝাবেন পরিষ্কার পরিচ্ছনতার গুরুত্ব এবং করোনা ভাইরাস এর ভয়ঙ্কর রুপ সম্পর্কে।

৫. হাত ধোয়ার জন্য গরম/ঠাণ্ডা পানি ব্যবহারঃ

হাত ধোয়ার জন্য পানির যে কোন তাপমাত্রা ব্যবহার করা যাবে। সাবানের সাথে ঠান্ডা পানি এবং গরম পানি জীবাণু এবং ভাইরাস হত্যা করতে সমানভাবে কার্যকর।

৬. তোয়ালে দিয়ে হাত শুকিয়ে নিতে হবেঃ

সাবান বাইরের শেল ধ্বংস করে করোনা ভাইরাসকে মেরে ফেলে। তাই হাত ধোয়ার পর পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে ভালো করে হাত ধুতে হবে।

 আরো পড়ুনঃ

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সবচেয়ে জনপ্রিয় দুটি ভ্যাক্সসিন ফাইজার এবং মোডের্না কোম্পানির ইতিহাস

কাঁদলে অশ্রু ঝরে কেন?

শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমানোর জন্য ৫ গুরুত্বপূর্ণ ব্যায়াম

কোভিড-১৯ : মাস্ক যেভাবে নির্বাচনী ইস্যুতে পরিণত হয়েছিলো আমেরিকায়

৭. কোনটি ভাল:

সাবান এবং পানি দিয়ে হাত ধোয়া বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা?

সাধারণভাবে, সাবান এবং পানি এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে সঠিক ভাবে হাত ধুলে অধিকাংশ জীবাণু হত্যা করা যায়। সাবান বাইরের শেল ধ্বংস করে করোনাভাইরাসকে হত্যা করে ।



হাত বেশি নোংরা থাকলে সাবান ও পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। হ্যান্ড স্যানিটাইজার বেশি নোংরা হাতে কম কার্যকরী। বাড়ির বাইরে হ্যান্ড স্যানিটাইজার প্রায়ই বেশি সুবিধাজনক হয়, কিন্তু জরুরী প্রসঙ্গে খুঁজে পাওয়া ব্যয়বহুল বা কঠিন হতে পারে। এছাড়াও, অ্যালকোহল ভিত্তিক হ্যান্ড স্যানিটাইজার করোনাভাইরাসকে হত্যা করে, কিন্তু এটি সব ধরনের ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসকে হত্যা করে না।

উদাহরণস্বরূপ, নরোভাইরাস এবং রোটাভাইরাস যা ডায়রিয়া সৃষ্টি করে। এটা এছাড়াও বিষাক্ত হতে পারে যদি গিলে ফেলা হয় । এটি শিশুদের নাগালের বাইরে সংরক্ষণ করা উচিত এবং শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের তত্ত্বাবধানে ব্যবহার করা উচিত।

৮. কাছে সাবান না থাকলেঃ

Image Source: Google

হাতের কাছে সাবান না থাকলে দ্বিতীয় বিকল্প পদ্ধতি হলো  হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার। এমন স্যানিটাইজার ব্যবহার করবেন যাতে কমপক্ষে ৬০% অ্যালকোহল থাকে। সাবান পানি বা ছাই ব্যবহার ও ব্যাকটেরিয়া অপসারণ করতে সাহায্য করতে পারে।

৯. করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে কিছু পদক্ষেপঃ

শারীরিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। অন্যদের থেকে অন্তত এক মিটার (তিন ফুট) দূরে থাকতে হবে।  হাত মেলানো, আলিঙ্গন এড়াতে হবে। খাদ্য, পাত্র, কাপ এবং তোয়ালে ভাগাভাগি  করা যাবে না। যাদের ঠাণ্ডা বা ফ্লুর মত উপসর্গ আছে তাদের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এড়িয়ে চলতে হবে। কাশি বা হাঁচির সময় কনুই বা টিস্যু দিয়ে আপনার মুখ এবং নাক ঢেকে রাখতে হবে। মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে (মুখ, নাক, চোখ)।

সব সময় নিজেকে এমন ভাবে নিরাপদে রাখতে হবে যেনো আপনার থেকে সবাই নিরাপদ থাকে। করোনা ভাইরাস সম্পর্কিত সকল নিয়ম আমাদের সবার মেনে চলতে হবে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ অথবা স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সর্বশেষ তথ্যের সাথে আপডেট থাকুন।

Total
0
Shares
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous Article

ব্যানশি : ক্রিমিনালি আন্ডাররেটেড এক অ্যাকশন টিভি সিরিজ

Next Article

দ্যা ইয়েলো সী (২০১০) : পরাজিত মানুষের ক্রোধের আখ্যান

Related Posts
আরও পড়ুন

কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন এবং শেয়ার বাজার

কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন এবোং শেয়ার বাজার  যখন প্রথম করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন সরবরাহের প্রতিযোগিতা সরব হয়ে ওঠে, তখন সাথে সাথে অনেক বিনিয়োগকারী সুস্থতার প্রত্যাশায় বাজারে ভ্যাকসিন আসার সাথে সাথে কোম্পানির শেয়ার কেনার কথা বিবেচনা করছেন। ফিজার এবং বায়োনটেক একটি বড় মাইলফলক…

কোরিয়ায় চলছে করোনার তৃতীয় ধাপ

কোভিড-১৯ এ নতুন সংক্রমণ দেখেছে দক্ষিণ কোরিয়া যেখানে ভাইরাস প্রতিদিন ১০০০ এর ও বেশী রোগে আক্রান্ত হয়েছে, যা ফেব্রুয়ারি এবং মার্চের প্রথম ধাপের তুলনায় সর্বোচ্চ।   কোভিড-১৯ এর সংক্রমণের হার কমানোর…

সর্বাধিক কোভিড-১৯ আক্রান্ত দেশ

এই নিয়মিত আপডেট করা তথ্য গ্রাফিক কোভিড-১৯ কেস সঙ্গে দেশগুলির রেকর্ড রাখে। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনো তালিকার শীর্ষে রয়েছে, যেখানে মোট ১৪ মিলিয়ন অতিক্রম করেছে। মোট বৈশ্বিক সংখ্যা এখন…

ভারত ও ব্রাজিলে করোনাভাইরাস

যখন ইউরোপীয় দেশগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্র করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ধাপের সাথে লড়াই করছে, তখন অন্যান্য দেশগুলো- যেমন ভারত এবং ব্রাজিলে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েই যাচ্ছে।   ওয়াশিংটন পোস্টের মতে, ভারতের শহুরে জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য – উদাহরণস্বরূপ দিল্লি বা মুম্বাইয়ে এন্টিবডি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, যার ফলে নতুন করে আক্রান্ত কমে…

আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন

Total
0
Share