যুক্তরাজ্যে বৃহদাকারে সাইকেলের উৎপাদন শুরু হয় ১৮৬৮ সালে। রাউলি বি টার্নারএকটি মিশো বাইসাইকেল ব্রিটেনে নিয়ে আসেন এবং তাঁর চাচা জোসিয়াহ টার্নারকেদেখান৷ জোসিয়াহ তখন কভেন্ট্রি সুইং মেশিন কোম্পানিতে ম্যানেজার ছিলেন। রাউলি ৪০০টি (মতান্তরে ৫০০টি) সাইকেলের অর্ডার দেন৷ যার অর্ধেক ফ্রান্সে এবং বাকি অর্ধেক বিক্রি হওয়ার কথা ছিলো যুক্তরাজ্যে। যুদ্ধের কারণে ফ্রান্সের ব্যাচ হারিয়ে যায়। কিন্তু যুক্তরাজ্যের ব্যাচ খুব সহজেই বিক্রি হয়ে যায় এবং সেখানে সাইকেলের ব্যাপারে লোকজনের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি হয়।
আমেরিকা বা যুক্তরাষ্ট্রে বাইসাইকেল ক্রেজ (যেটি ভেলোসিপিডোম্যানিয়া নামে পরিচিত) শুরু হয় প্যারিসের সাইকেল বিষয়ক খবর থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে। এর সূচনা হয় ১৮৬৮ সালের শেষের দিকে এবং সহসাই পূর্ব উপকূলীয় শহরগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত হয় পৃথিবীর প্রথম সাইক্লিং বিষয়ক ম্যাগাজিন দ্যা ভেলোসিপেডিস্ট। এটির প্রকাশক ছিলো পিকারিং অ্যান্ড ডেভিস নামক সাইকেল প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান।
ছোট আকারের আমেরিকান কোম্পানিগুলো সাইকেলের জনপ্রিয়তার এই সুযোগ লুফে নিতে চায়, যার ফলশ্রুতিতে ২ বছরের মধ্যে ২৫০টি প্যাটেন্টের আবেদন জমা হয়। আগের স্কেটিং ক্রেজের ফলে গড়ে ওঠা ইনডোর রাইডিং অ্যাকাডেমিগুলো সাইকেলকে প্রোমোট করে। কিন্তু কিছুদিন পরেই সাইকেল বিষয়ক এই উন্মাদনায় ভাটা পড়ে কারণ তৎকালীন সাইকেলগুলো দিয়ে দূরপাল্লার ভ্রমণ সম্ভব ছিলো না। এক্ষেত্রে ক্যালভিন উইটিরও ভূমিকা ছিলো। কেননা আমেরিকায় সাইকেল প্যাটেন্টের একমাত্র মালিক হওয়ায় বিক্রি হওয়া প্রত্যেকটি সাইকেল থেকে তাকে ১০ ডলার করে রয়্যালটি দিতে হতো। যদিও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাইকেল প্রস্তুতকারকরা এটি দিতেন না। ১৮৭১ সাল নাগাদ আমেরিকায় সাইকেল বিষয়ক ক্রেজ একেবারে স্তিমিত হয়ে পড়ে। ১৮৭৬ সালে অনুষ্ঠিত ফিলাডেলফিয়া সেনটেনিয়াল এক্সপোজিশন এর আগে লোকজনের মধ্যে এ ব্যাপারে আর তেমন কোন আগ্রহ পরিলক্ষিত হয় নি। ঐ এক্সপোজিশনের ফলেই আমেরিকান সাইকেল ক্রেজ আবার পুনরুজ্জীবিত হয়।
১৮৭০ এর দশকের প্রথমদিকে সাইকেল টেকনোলজি নিজস্ব একটি রুপ পায়। এর আগে বোনশেকার নামে যে সাইকেলগুলো ছিলো, এগুলো নির্মিত হয়েছিলো ঘোড়ার গাড়ি তৈরিতে যে টেকনোলজি ব্যবহৃত হতো সেই টেকনোলজি ব্যবহার করে। এই টেকনোলজির সাইকেলের পরিবর্তে আসে দৃষ্টিসুখকর ‘অর্ডিনারি’বা সাধারণ সাইকেল। সাইকেল তৈরীতে ফাঁপা লোহার টিউব আকৃতির ফ্রেম, উন্নতমানের বল বিয়ারিং, রীম, টেনশন-স্পোকড চাকা, শক্ত রাবারের টায়ার ইত্যাদির ব্যবহার প্রচলিত হয়। বাড়তি নজর দেওয়া হয় সৌন্দর্যের দিকে।
১৮৭১ সালে জেমস স্টার্লি তৈরী করেন ‘এরিয়াল’নামক সাইকেল। সাইকেলের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে এটি। কারণ এই এরিয়াল-ই সাইকেলের ডিজাইনের একটি স্ট্যান্ডার্ড সেট করে দেয়। এটির সামনের চাকা ছিলো ৪৮ ইঞ্চির (১২২ সে.মি) এবং পেছনের চাকার আয়তন ছিলো ৩০ ইঞ্চি (৭৬ সে.মি)। পরবর্তী ১০ বছরে স্টার্লি বাইসাইকেল এবং ট্রাইসাইকেলের ডিজাইনে এমনসব নতুনত্ব নিয়ে আসেন যে, তিনি ফাদার অফ দ্যা সাইকেল ট্রেড খেতাব অর্জন করেন। ১৮৭৪ সালের মধ্যেই সাইকেল ইন্ডাস্ট্রির কেন্দ্র প্যারিস থেকে কভেন্ট্রিতে স্থানান্তরিত হয়। এবং বিংশ শতাব্দীতে বাইসাইকেল টেকনোলজির উৎকর্ষ সাধনে নেতৃত্ব দেয় ব্রিটেন।
১৮৭৬ সালে অনুষ্ঠিত ফিলাডেলফিয়া সেনটেনিয়াল এক্সপোজিশনে ২টি ব্রিটিশ কোম্পানি তাদের নির্মিত বাইসাইকেলগুলো প্রদর্শন করে। তাদের প্রদর্শনী অ্যালবার্ট ই পোপ নামে বোস্টনের এক শিল্পপতির খুবই পছন্দ হয়। ১৮৮০ সাল নাগাদ পোপ ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি ‘কলম্বিয়া’ নামক সাইকেলের উৎপাদন শুরু করে। এটি ছিলো ব্রিটিশ ডুপ্লেক্স এক্সেলসিয়র এর কপি। আর এভাবেই আমেরিকায় বাইসাইকেল ইন্ডাস্ট্রির সূচনা হয়।
অর্ডিনারি সাইকেলগুলোর ক্র্যাঙ্কগুলো সরাসরি সামনের চাকার সাথে যুক্ত ছিলো এবং প্যাডেল ঘোরানোর গতি এবং চাকার ব্যাসের উপর এর গতি নির্ভর করতো৷ বড় আকারের সামনের চাকাযুক্ত সাইকেলগুলো বেশি গতিতে চলতো এবং খারাপ রাস্তায়ও এগুলো ভালো চলতো। টেনশন স্পোকিং থাকায় মালিকের পায়ের দৈর্ঘ্য অনুসারে সামনের চাকার ব্যাস ৪০-৬০ ইঞ্চি (১০২-১৫২ সে.মি) হতে পারতো। এই উঁচু সাইকেলগুলোকে প্রথমে ‘অর্ডিনারি’ নামে ডাকা হলেও পরবর্তীতে এগুলো পেনি-ফার্দলিং নাম পায়। এক্ষেত্রে সামনের চাকাকে তুলনা করা হয় ব্রিটিশ মুদ্রা পেনিএর সাথে এবং ছোট চাকা তুলনীয় হয় একই দেশের ছোট আকারের মুদ্রা ফার্দলিং এর সাথে। এই সাইকেলগুলোর দুটি ভার্সন ছিলো। একটি হলো সাধারণের ব্যবহারের জন্য ব্যবহৃত ভারী ভার্সন। এবং অন্যটি হলো রেস ট্র্যাকে ব্যবহৃত হওয়ার জন্য হালকা ভার্সন৷ আরোহীর বসার সীট অনেক উঁচুতে অবস্থিত হওয়ার এটি থেকে পড়ে আরোহীর দূর্ঘটনায় পতিত হওয়ার সম্ভাবনা ছিলো। এটিতে ওঠা-নামা ছিলো কষ্টকর, এছাড়া ব্রেক করার জটিলতার কারণেও আরোহীর ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার আশংকা ছিলো। সর্বোপরি এই সাইকেলগুলোর দাম এতটাই বেশি ছিলো যে উচ্চবিত্ত এবং মধ্যবিত্তরা ছাড়া আর কারো এগুলো ব্যবহারের সক্ষমতা ছিলো না।
যখন অর্ডিনারি সাইকেলের উন্নতি সাধনের চেষ্টা করা হচ্ছিলো, তখন সাইকেলকে নিরাপদ বাহন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে অসংখ্য বিকল্প ডিজাইনের কথা চিন্তা করা হয়। ট্রাইসাইকেল, গিয়ারিং এর মাধ্যমে ছোট আকৃতির সামনের চাকার ব্যবহার এবং ট্রেডলিং এর মাধ্যমে আরোহী এবং তার আসনকে আরো নীচে স্থাপন করা ইত্যাদি এর অন্তর্ভুক্ত। এগুলো পরিচিত ছিলো সেফটি বাইসাইকেল নামে।
এসকল সেফটি বাইসাইকেলের ডিজাইন তৈরীর ক্ষেত্রে যেসকল ব্যাপারকে অপরিহার্য বিবেচনা করা হয় সেগুলো হলো : ৩০ ইঞ্চি বা ৭৬ সে.মি ব্যাসের সামনের চাকার ব্যবহার, চেইন-চালিত পেছনের চাকার ব্যবহার যেখানে সামনের স্প্রকেট বা চক্রদন্তের আকার হয় পেছনেরটির দ্বিগুণ, কম সেন্টার অফ গ্র্যাভিটি এবং বাহনের সামনের অংশ ব্যবহার করে এটিকে নিয়ন্ত্রণ করা।
এধরণের ট্রাইসাইকেল এবং প্রোটোটাইপ বাইসাইকেল তৈরী করা হয় ১৮৭০ এর দশকে। হ্যান্স রেনল্ডইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারে বুশ রোলার চেইনআবিষ্কার করেন ১৮৮০ সালে। এর ফলে সাইকেলের ভারসাম্য, ব্রেকিং এবং এতে চড়ার ক্ষেত্রে সুবিধা হয়।
এইসকল সুবিধা সম্বলিত প্রথম বাইসাইকেলের নাম ১৮৮৫ রোভার সেফটি। এটির ডিজাইন করেন জেমস স্টার্লির ভাতিজা জন কেম্প স্টার্লি। এর আগে এই ধরণের বেশকিছু সেফটি বাইসাইকেল নির্মিত হলেও ১৮৮৫ সালে এই মডেল এসে বাজার দখল করে। তখন থেকে সাইকেল বলতে মানুষ সেফটি সাইকেলগুলোকেই বোঝাতে শুরু করে। ১৮৯২ সাল ছিলো ইংল্যান্ডে অর্ডিনারি সাইকেলের শেষ বছর।
প্রথমদিকে সেফটি বাইসাইকেলগুলোতে শক্ত রাবারের টায়ার ব্যবহার করা হতো। ১৮৮৮ সালে জন বয়েড ডানলপ আবিষ্কার করেন নিউম্যাটিক টায়ারএবং ১৮৯৩ সাল নাগাদ সকল সাইকেলে এগুলোর ব্যবহার শুরু হয়। নিউম্যাটিক টায়ার এবং টেনশন-স্পোকড চাকার ব্যবহারের ফলে সাইকেলে ভ্রমণ আরামদায়ক হয়ে ওঠে এবং মানুষজন সিরিয়াসভাবে ঘোড়ার পরিবর্তে সাইকেল ব্যবহারের কথা চিন্তা করে। ১৮৯০ এর দশকে এই ডায়মন্ড শেপের ফ্রেম, নিউম্যাটিক টায়ার, চেইন এবং ব্রেক সম্বলিত সাইকেলের ব্যাপক উৎপাদন শুরু হয়। এর ফলে যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপ এবং আমেরিকায় প্রচুর মানুষ সাইকেল কিনতে শুরু করে এবং পরবর্তী বছরগুলোতে সাইকেলের বাৎসরিক উৎপাদন লাখ থেকে মিলিয়নে পৌঁছায়। সাইকেলকে নারী ক্ষমতায়নের প্রতীক হিসেবেও দেখা হয়। কিন্তু অটোমোবাইল শিল্প এবং গণপরিবহনের আগমনে এই জনপ্রিয়তায় আবার ভাটা পড়ে। এর ফলে অনেক কোম্পানি দেউলিয়া হয়ে পড়ে এবং সাইকেলের দাম কমে যায়।
১৯০০ সাল এবং তার পরবর্তীকালে সাইকেল তৈরীর উপকরণ, ফ্রেমের ডিজাইনে নানা পরিবর্তন এলেও মূল ডিজাইন একই থেকে গেছে। এসময়ে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য টেকনিক্যাল সংযোজন হলো মাল্টিপল-স্পীড গিয়ার এর উদ্ভাবন। উইলিয়াম রেইলি ১৮৯৬ সালে টু-স্পীড ইন্টারনাল হাব গিয়ার আবিষ্কারের পর এটি শৌখিন সাইকেলগুলোর একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে পড়ে। টু-স্পীডের পর আসে থ্রী স্পীডের গিয়ার।
এরপর এই গিয়ার নিয়ে চলে আরো নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়। ১৯২০ সালে ফ্রান্সে জনপ্রিয়তা অর্জন করে ডিরেইলার গিয়ার। এই গিয়ার দিয়ে চেইনকে এক স্প্রকেট থেকে অন্য স্প্রকেটে স্থানান্তর করা যেত।
এইসময়ে আমেরিকায় অটোমোবাইল শিল্পের অগ্রগতির ফলে সাইকেল ছিলো মূলত গরিবদের বাহন। এছাড়া গাড়ি চালানোর জন্য পর্যাপ্ত বয়স হয় নি এমন তরুণরাও ছিলো সাইকেলের ক্রেতা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকান সৈনিকরা ইউরোপে কম ওজনের গিয়ারযুক্ত সাইকেল দেখে। ১৯৫০ এবং ৬০ এর দশকে আমেরিকায় প্রাপ্তবয়স্ক লোকেরাও সাইকেলে কিছুটা আগ্রহী হয়। ষাটের দশকে টীনএজাররা শুইন স্টীনগ্রে নামক হাই-রাইজ বাইকে আগ্রহী হয়ে ওঠে। ১৯৬৮ সালে মোট বিক্রিত সাইকেলের ৭৫ শতাংশই ছিলো এগুলো। স্টীনগ্রে বিষয়ক ক্রেজ শেষ হলে তরুণদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষ স্থান অর্জন করে টেন-স্পীডস নামক সাইকেল। দশ ধরণের গীয়ার রোটেশন সম্ভব ছিলো বলে এটিকে এই নামে ডাকা হতো।
১৯৭২ সালে ৭ মিলিয়ন থেকে ১৯৭৪ সালে আমেরিকায় সাইকেল বিক্রির সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে ১৪ মিলিয়নে পৌঁছায়। এর অর্ধেকই ছিলো টেন-স্পীডস। ১৯৭৪ সালে সেখানে তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করায় প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সাইকেল ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং আমেরিকা সাইকেল বিপণনের একটি বড় বাজারে পরিণত হয়। কিছুদিন পরেই অবশ্য সাইকেল বিক্রির পরিমাণ আবার অর্ধেকে নেমে আসে এবং অনেক কোম্পানি মূলধন হারায়।
সত্তরের দশকে সাইকেলের ক্ষেত্রে আবার নবজাগরণ আসে মাউন্টেইন বাইকের মাধ্যমে৷ এগুলোর আবিষ্কারকরা এগুলোর নাম দিয়েছিলেন ক্ল্যাঙ্কার্স। আশির দশক নাগাদ এগুলো টেন-স্পীডস সাইকেলের স্থান দখল করে নেয়, যেমন আগের শতাব্দীতে সেফটি সাইকেল দখল করেছিলো অর্ডিনারির জায়গা। ১৯৯৩ সালে আমেরিকায় মোট বিক্রিত সাইকেলের ৯৫ শতাংশই ছিলো মাউন্টেইন বাইক।
আরো পড়ুনঃ
ব্লু অরিজিন : জেফ বেজোসের স্পেস ফ্লাইট কোম্পানি [পর্ব – ১]
বেনসন অ্যান্ড হেজেস : রাজকীয় ব্রিটিশ সিগারেটের সাতকাহন [পর্ব-২]
বর্তমানে সাইকেলকে প্রধানত ৬টি ভাগে ভাগ করা হয়। এগুলো হলো : ইউটিলিটি, ট্যুরিং, রেসিং, মাউন্টেইন, হাইব্রিড এবং বিএমএক্স। এছাড়া ইউরোপে ছোট চাকাবিশিষ্ট ফোল্ডিং সাইকেল বেশ জনপ্রিয়। এই ধরণের বাইকের ডিজাইনার ছিলেন ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ার অ্যালেক্স মলটন।
পৃথিবীতে সাইকেলের সংখ্যা অটোমোবাইলের দ্বিগুনেরও বেশি। অনুপাতের হিসেবে সেটি ৩ঃ১। জাপান, নেদারল্যান্ড, ডেনমার্কের মত উন্নত বিশ্বের দেশসমূহ শপিং এবং ছোট দূরত্বের চলাচলের ক্ষেত্রে সাইকেল ব্যবহার করতে জনগণকে উৎসাহী করার চেষ্টা করছে। আমেরিকাও গাড়ীর বদলে সাইকেল ব্যবহারের কথা বলছে। এসব দেশে সাইকেল চলাচলের জন্য আলাদা লেনেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের দেশেও অতি সম্প্রতি কিছু রাস্তায় সাইকেলের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে যাতায়াতের ক্ষেত্রে অনেক আগে থেকেই অবদান রাখছে সাইকেল।
পৃথিবীর জনপ্রিয়তম সাইকেল ব্র্যান্ডের তালিকা করলে সেখানে প্রথমদিকে স্থান করে নেবে জায়ান্ট, ট্রেক, স্পেশালাইজড, স্কট, ক্যাননডেল, বিয়াঞ্চিএর মত সাইকেল প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো। বাংলাদেশে হিরো, ফিনিক্সব্র্যান্ডের সাইকেল সবচেয়ে জনপ্রিয়। আস্তে আস্তে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে দেশী ব্র্যান্ডগুলোও।
গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রি ট্রেন্ডেররিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমানে সাইকেল ইন্ডাস্ট্রির মূল্যমান ৫৫.৭২ বিলিয়ন ডলার। প্রবৃদ্ধির হার ৬.১%। এই হার যদি বজায় থাকে, তাহলে ২০২৫ সাল নাগাদ এর মূল্যমান হবে ৭৫.৪৭ বিলিয়ন ডলার।
কোভিড-১৯ এ জর্জরিত বিশ্বে সাইকেলের জনপ্রিয়তা বেড়েছে বহুগুণ৷ এইসময়ে গণপরিবহনে চলাচল করা ছিলো স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এবং লকডাউনে অনেক দেশেই এগুলোর চলাচল ছিলো বন্ধ। তাই স্যোশাল ডিসটেন্সিং বাহন হিসেবে মানুষ বেছে নিয়েছে সাইকেলকে। নতুন সাইকেল বিক্রি হয়েছে প্রচুর পরিমাণে। যাদের কাছে আগে থেকেই সাইকেল ছিলো, তারা সেগুলোকে ধুয়েমুছে সাফ করে ব্যবহার উপযোগী করেছেন আবার। এছাড়া কার্বন নিঃসরণ কমাতে, পৃথিবীকে বাসযোগ্য রাখার ক্ষেত্রে সাইকেল পালন করতে পারে অপরিসীম ভূমিকা৷ তাই একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, সাইকেল এবং সাইকেল ইন্ডাস্ট্রি টিকে থাকবে আরো বহুকাল ধরে।
This is a Bangla article. This article is about the history of the bicycle.
All the necessary links are hyperlinked.
Featured images are collected from Google.