মাহেশিন্তে প্রাথিগারামএর বাংলা অর্থ হলোমহেশের প্রতিশোধ।এটি একটি ভারতীয় মালায়ালাম ভাষার চলচ্চিত্র যেটি কেরালায় মুক্তি পায় ২০১৬ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি এবং ভারতের বাকি রাজ্যসমূহে মুক্তি পায় ১২ই ফেব্রুয়ারি। এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমেই পরিচালক হিসেবে অভিষেক হয় দিলিশ পোথানের। এখানে একটি চরিত্রে স্বল্প সময়ের জন্য পর্দায়ও দেখা গেছে তাকে। আর মালায়ালাম ভাষার মুভি নিয়মিত দেখলে এই লোক আপনার পরিচিত হওয়ার কথা। বেশ কিছু সিনেমাতে অভিনয় করেছেন তিনি। ৩৫ মিলিয়ন রুপি বাজেটের এই মুভি বক্স অফিসে আয় করেছে ৩৮০ মিলিয়ন রুপি। এটির আইএমডিবি রেটিং ৮.৩।
ভারতের কেরালা রাজ্যের থুরাভুর নামক স্থানের অধিবাসী থাম্পান পুরুষাননামে এক ব্যক্তির জীবনের ঘটনা অবলম্বনে রচিত এই সিনেমার গল্প লিখেছেন শ্যাম পুষ্কারান। সিনেম্যাটোগ্রাফিতে ছিলেন সাইজু খালেদএবং এডিটিং এর কাজ করেছেন সাইজু শ্রীধরন।সংগীত পরিচালনায় ছিলেন বিজিবাল মানিয়িল।১২০ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই সিনেমার কুশীলবরা হলেন যথাক্রমে ফাহাদ ফাসিল, অনুশ্রী, অপর্ণা বালামুরালি, অ্যালেন্সিয়ার লেই লোপেজ, সৌবিন শাহির, সুজিথ শংকরপ্রমুখ।
অনলাইন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওতে দেখা যাবে এটি।
নামের মধ্যে প্রতিশোধ শব্দটি থাকলেও এটি কোন এভারেজ রিভেঞ্জ ফ্লিক না৷ এখানে অন্যান্য রিভেঞ্জ ফ্লিকের মত লিড ক্যারেক্টারকে আমরা গাড়ি এবং গুলি নিয়ে হিরোইজম দেখাতেও দেখি না। বরং এখানে আমরা দেখি প্রতিদিকার যাপিত জীবনের সিম্পল প্রকাশ। হিউমার এই মুভির প্রাণ। সমকালীন মালায়ালাম সিনেমায় ঘটনাবলীর বাস্তবিক চিত্রায়ণের ধারা প্রচলিত এবং অহরহ এই ধরণের সিনেমা তৈরী হচ্ছে এখানে।মাহেশিন্তে প্রাথিগারামসিনেমায়ও এই ধারা অব্যাহত রয়েছে। দৈনন্দিন জীবনের ঘটনাবলির সহজ-সরল প্রকাশ এবং পুরো গল্পজুড়ে বিরাজমান রসবোধাত্বক আবেশ এই সিনেমার প্রতি দর্শককে আকর্ষিত করে রাখে। তারপর কি হয়, তারপর কি হয় ভেবে দর্শক উৎকীর্ণ হয়ে বসে থাকে সীটের কিনারায় এবং সিনেমার শেষে তাদের ঠোঁটে ফুটে ওঠে তৃপ্তির হাসি। এগুলো যদি ভালো সিনেমার গুণাবলি না হয়, তাহলে আর কাকে ভালো সিনেমা বলবেন?!
বাণিজ্যিকভাবে সফল হতে হলে একটি সিনেমার টেকনিক্যাল দিকগুলোর পাশাপাশি দর্শককে বিনোদন দেওয়ার ব্যাপারেও ভাবতে হয় পরিচালককে। গল্প, টপনচ পার্ফম্যান্স, নির্মাণশৈলীর পাশাপাশি বিনোদনের ব্যাপারটিও উপস্থিত এখানে। একারণেই এটিকে (মাহেশিন্তে প্রাথিগারাম) ‘পিউর ফ্যামিলি এন্টারটেইনার’ ক্যাটাগরিতেও ফেলতে পারেন আপনি।
খুব বেশি নাটকীয় বা ভাবপ্রবণ না হয়ে মাহেশিন্তে প্রাথিগারামজয় করে নেয় দর্শকের হৃদয়। এই মুভির এত দর্শকপ্রিয়তা পাওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ এর সহজ-সরল প্রকাশভঙ্গী। পুরো সিনেমাজুড়ে এর চরিত্রদের সূক্ষাতিসূক্ষ আচার-আচরণ আপনার মুখে হাসি ফোটাবে। কারণ এই ধরণের চরিত্রগুলো আমরা বাস্তব জীবনে দেখছি এবং এদের সাথে আমরা নিজেদের এবং আমাদের আশপাশের লোকজনকে মেলাতে পারি। আমরা বুঝতে পারি তাদের আচরণ এবং এইসব আচরণের পেছনে থাকা মোটিভকে।
গল্পের মূল চরিত্র হলো ফাহাদ ফাসিল অভিনীত মহেশ ভাবানা।সে একজন ফটোগ্রাফার এবং কাট্টাপানা শহরে তার একটি ছোট স্টুডিও রয়েছে। উঁচু-নীচু পাহাড়ে ঘেরা এই শহরে আধুনিকতার ছোঁয়া এখনও পুরোপুরি এসে লাগে নি। সে বিবাহ, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াসহ নানা অনুষ্ঠানে ছবি তোলে। অবিবাহিত মহেশ তার বৃদ্ধ বাবার সাথে বাস করে তাদের ছোট্ট বাড়ীতে। এই মহেশের মধ্যে রয়েছে প্রতিশোধ নেওয়ার প্রবল আকাঙ্ক্ষা। তবে তার এই প্রতিশোধের ধরনটি ভিন্ন, সচরাচর এমন দেখতে পাই না আমরা।
মুভির একদম শুরুতে আমরা দেখি মহেশ ইদুক্কির হিমশীতল জলে গোসল করছে। এসময় সে গুনগুনিয়ে মালায়ালাম ইন্ডাস্ট্রির সুপারস্টারমোহানলালএরনারাসিমহামনামক মুভির একটি গান গায়। তারপর তাকে দেখা যায় ঘষেমেজে নিজের স্যান্ডেল পরিষ্কার করতে। পরে আমরা দেখি এই স্যান্ডেল নিয়ে বিশাল বড় ঘটনা ঘটে গেছে তার জীবনে। যে কারণে সে পণ করেছে জীবনেও স্যান্ডেল না পরার। তবে সেই কাহিনীর খোলাসা হবে আরো পরে। তার আগে আসুন আমরা মহেশ সম্পর্কে আরো জানি। মুভিতে তার চরিত্রের বিভিন্ন দিকের পূঙ্খানুপুঙ্খ বণর্না প্রদান করেছেন পরিচালক।
গল্পের অগ্রগতির সাথে আমরা জানতে পারি স্কুলের এক সহপাঠীর সাথে দীর্ঘদিন ধরে প্রেম করেছে মহেশ। তার প্রেমিকা সৌমিয়া নার্স হিসেবে কাজ করতো দূরের এক শহরে। তাদের প্রেমের ব্যাপারে এলাকার সবাই জানতো এবং আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়েছিলো তাদের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার ব্যাপারটি অবশ্যম্ভাবী। কিন্তু সৌমিয়ার পিতা তার জন্য মহেশের চেয়ে যোগ্য এক পাত্র খুঁজে পায়, যে পুরুষ নার্স হিসেবে কর্মরত আছে কানাডায়। তিনি তার মেয়েকে এটা বোঝাতে সমর্থ হন যে জীবনসঙ্গী হিসেবে মহেশের চেয়ে ঐ পাত্র ভালো এবং এই বিয়েতে রাজী হলে সৌমিয়া পুরো দুনিয়া ঘুরে দেখতে পারবে। সৌমিয়াও বাবার পছন্দের প্রবাসী পাত্রকে বিয়ে করতে রাজী হয়ে যায়। এই ঘটনায় প্রচন্ড দুঃখ পায় মহেশ। কিন্তু ভাগ্যকে বদলাবার জন্য কোন উদ্যোগ নিতে দেখা যায় না তাকে, বিনা বাক্য ব্যয়ে সে মেনে নেয় নিজের নিয়তিকে। এমনকি সৌমিয়া বা তার অভিভাবকরা তার সাথে কথা বলতে আসলেও সে বিনা তর্কে তাদের কথায় রাজী হয়ে যায়, সৌমিয়ার বিয়েতে কোন বাধা দেয় না।
এই জায়গায় একটি অসাধারণ দৃশ্যের কথা না বললেই নয় :-
সৌমিয়া তার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে খাবার-দাবার খেয়ে হাত ধুতে এসেছে। বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন যে জায়গায় করা হয়েছে সেটি রাস্তা থেকে অনেক উঁচুতে অবস্থিত। এখানে দাঁড়িয়ে রাস্তার দিকে তাকালে সৌমিয়া দেখতে পায় মহেশকে। মোটর সাইকেলে বসে দূর থেকে সে তাকিয়ে আছে তার দিকে, টলমল চোখে শূন্যদৃষ্টি আর ঠোঁটের কোণে লেগে আছে হাসি।
এই দৃশ্যটির চিত্রায়ণ এবং এখানে ফাহাদের অভিনয় এত সুন্দর হয়েছে যে দর্শক এই দৃশ্যকে মনে রাখবে বহুদিন।
এই পর্যায়ে এসে হয়তো আপনার মনে হতে পারে মহেশ সৌমিয়ার বিরুদ্ধে রাগ পুষে রেখেছে এবং তার বা তার পরিবারের উপর বদলা নিতে চায় বিশ্বাসভঙ্গের কারণে। কিন্তু মহেশ এরকম মানুষ না, সে বরণ করে নিয়েছে তার পরাজয়কে। তার লড়াই নিজের সাথে, তার দ্বন্দ্ব অভ্যন্তরীণ। এই যে সৌমিয়া এবং তার পরিবারের সিদ্ধান্ত সে মেনে নিয়েছে, নিজের অধিকারের কথা বলতে পারে নি; এই ঘটনা প্রভাব ফেলেছে তার মনে। তার মনে হয় জীবনে কোন সময়ই আর নিজের মনের কথা সাহস করে বলতে পারবে না সে। তার মনের ভেতরের এই জটিলতা আর ইনসিকিউরিটির বিরুদ্ধেই সংগ্রাম তার। এগুলোর বিরুদ্ধে জিততে পারলেই পূর্ণ হবে তার প্রতিশোধ। মহেশের এই যে লড়াই এর সাথে দর্শকরা মিলাতে পারবেন নিজের জীবনের ঘটনাবলীকেও।
আমাদেরকেও এরকম জীবনে কোন না কোন সময় নিজের কথা ঠিকমত বলতে না পারার কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। এরকম ইনসিকিউরিটি আমাদেরকেও গ্রাস করেছে। আর মহেশের এই ইনসিকিউসিটি পুরো গল্পজুড়েই বিদ্যমান। আর এভাবেই ইন-ডেপথ ডিটেইলিং এর কারণে মহেশ আর কোন কল্পিত চরিত্র থাকে না, সে মিশে যায় দর্শকের জীবনের সাথে।
আর ঠিক এই জায়গাটাতেই ফাহাদ ফাসিলের মাহাত্ম্য। চরিত্রের সাথে মিশে গিয়ে নিজের পার্ফম্যান্সকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। এটির আগে তাঁর কয়েকটি মুভি বাণিজ্যিকভাবে তেমন সফল ছিলো না। তবে তাঁর ডেডিকেশন বা ক্যালিবার নিয়ে সন্দেহ কখনোই ছিলো না। এখানে নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পেলেন বাণিজ্যিক সফলতাও।
এখানে সিনেমাপ্রিয় দর্শকরা আবার মিল পাবেন মোহনলালের সাথে। নিজের প্রাইম টাইমে এমন অনেক চরিত্রে তিনি অভিনয় করেছেন যেখানে তাকে পরিবারের জন্য নিজের ভালোবাসকে স্যাক্রিফাইস করতে দেখা গেছে। তাঁর চরিত্রের উপস্থিতি আমরা আবারও টের পাবো যখন দেখবো টিভিতে চলমান পুরাতন এক ছবিতে তাঁর করা ‘ম্যানটাস্টিক’চরিত্রের সামনে নারীদের সাথে ঝগড়া করে নিজের ‘পুরুষত্ব’ এর প্রমাণ করছেন এই ছবির একটি চরিত্র। এভাবেই পরিচালক বহু বছর ধরে সমাজে বিরাজমান পুরুষালী দাম্ভিকতার প্রতিবাদ করেছেন।
পুরুষালী দাম্ভিকতা না হলেও মহেশও যে দাম্ভিকতা থেকে পুরোপুরি মুক্ত তা কিন্তু নয়। তার কাছে মনে হয় সে খুবই ভালো ফটোগ্রাফার এবং অসাধারণ ছবি তোলে, কিন্তু জিমসিতার এই ভুল ভেঙ্গে দেয় সাহসিকতার সাথে কিন্তু সহজ-সরল প্রকাশভঙ্গীর মাধ্যমে।
নিজের জীবনের ইনসিকিউরিটি আর ট্র্যাজেডির কারণে যে মহেশ নিরাশাবাদী হয়ে গেছে, মানুষজনকে দূরে ঢেলে দিয়েছে এমন কিন্তু না। সে তার বাবার যত্ন নেয়, দোকানের দেখভাল করে, কাস্টোমারদের সাথে মন ভোলানো হাসি দিয়ে কথা বলে, বন্ধু-স্বজনের সাথে মাতে আড্ডায়। তার খুব কাছের ২জন মানুষ বয়সে খানিকটা বড় আর্টিস্ট বেবিএবং সমবয়সী ক্রিসপিন।তাদেরকে নিয়ে সময় কেটে যায় তার। এই দুটি চরিত্রে নিজেদের সেরাটা দিয়েছেন যথাক্রমে অ্যালেন্সিয়ার লেই লোপেজএবং সৌবিন শাহির।বিশেষ করে শাহিরের অসাধারণ কমেডিক টাইমিং এর কথা আলাদা করে বলতেই হবে।
আরো পড়ুনঃ
১) কখনো আসেনি (১৯৬১) : পরিচালনায় জহির রায়হান নামক জিনিয়াসের আবির্ভাব
২) বয়েজ অ্যান দ্যা হুড (১৯৯১) : আমেরিকান পপ কালচার বদলে দেয়া কামিং-অফ-এইজ ফিল্ম
৩) স্টেট অফ গ্রেইস (১৯৯০) : নাইন্টিজের আন্ডাররেটেড জেম
৪) দ্যা বার্ডস (১৯৬৩) : আলফ্রেড হিচককের অ-হিচককীয় সিনেমা
৫) কাগজ (২০২১) : সিস্টেম বনাম মানুষের চিরচেনা গল্প
আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় মহেশের বৃদ্ধ বাবা ভিনসেন্ট ভাবানাআপন মনে প্রলাপ বকেন। তার নিখোঁজ হওয়া নিয়েও সৃষ্টি হয় জটিলতা কিন্তু একটা সময় গিয়ে তাঁর চরিত্রের গুরুত্ব বুঝতে পারি আমরা। জীবনের নানা ব্যাপারে তার ফিলোসফিক্যাল কথাবার্তা তার জ্ঞানের পরিধির ব্যাপারে ধারণা দেয় আমাদেরকে। নিজেকে উৎকৃষ্ট মানের ফটোগ্রাফার ভাবা মহেশ যখন নিজের বাস্তবিক ক্যালিবার সম্পর্কে জানতে পেরে চিন্তায় ব্যাকুল হয়ে পড়ে; তখন তিনিই তাকে জীবন, ফটোগ্রাফি, কিভাবে ছবি তুলতে হয় এসব ব্যাপারে সম্যক ধারণা দেন। আর তার এসব উপদেশ মহেশের নিজের সেল্ফ ডিসকাভারিতে পালন করে অসামান্য ভূমিকা। ফটোগ্রাফির ব্যাপারে বাপ-ছেলের আলাপনের দৃশ্যটি এই সিনেমার অন্যতম সেরা একটি দৃশ্য। ভিনসেন্ট ভাবানার চরিত্রে অভিনয় করেছেন অ্যান্টনি কোচি।
মুভির একটি ঘটনা সমাজের সাধারণ রীতিনীতির সাথে খাপ খায় না। এখানে আমরা দেখতে পাই একটি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠানে এসে মহেশ আর সৌমিয়ার মধ্যে প্রেমাতুর অনুভূতির আদান-প্রদান হচ্ছে। সাদা চোখে বেখাপ্পা এই ঘটনার প্রভাব কিন্তু সুদূরপ্রসারী। কারণ এই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠানে হওয়া ঠুনকো এক তর্কাতর্কি মহেশের জীবনের গতিপথই পাল্টে দেয়।
কেওস থিওরি‘র বাটারফ্লাই ইফেক্ট নীতিঅনুযায়ী খুব ছোট কোন ঘটনাই পরবর্তীতে বিশাল কোন ঘটনার কারণ হতে পারে। বলা হয়, পৃথিবীর এক প্রান্তে প্রজাপতির ডানা ঝাপটানোর ফলে অন্য প্রান্তে সৃষ্টি হতে পারে ঘূর্ণিঝড়। মুভিতেও এমনই দেখি আমরা।
ঠুনকো কথা কাটাকাটির থেকে সৃষ্টি হওয়া গন্ডগোলের ফলে এক পুরুষ চরিত্র নিজের ঘরে নারীদের সাথে ‘পৌরুষ’ দেখাতে উদ্যত হয়, মহেশের সাথে জিমসনের ঝগড়া হয়, সে জিমসনের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার আগে স্যান্ডেল না পরার সিদ্ধান্ত নেয়। যার ফলশ্রুতিতে একসময় জিমসির সাথে তার দেখা হয়। এটিও তার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এসবকিছরই সূত্রপাত কিন্তু একটি সাধারণ তর্কাতর্কি থেকে।
আর এভাবেই সাধারণ গল্পের বর্ণনায় বাটারফ্লাই ইফেক্ট মিশে মুভিতে এসেছে ভিন্ন মাত্রা। মূলত বিভিন্ন পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়া এবং উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গল্পের চরিত্ররা কিভাবে আচরণ করে তার উপর নির্ভর করেই এগিয়ে চলেছে মাহেশিন্তে প্রাথিগারামের কাহিনী।
সৌমিয়া চরিত্রে অনুশ্রী এবং জিমসি চরিত্রে অপর্ণা উভয়েই ভালো করেছেন।
এছাড়া এই সিনেমায় পরিচালক কিছু জীবনমুখী শিক্ষাও দিতে চেয়েছেন৷
যেমন :-
যেকোন পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রাখতে পারলে পরে সেটি নিজের জন্যই ভালো হয়।
জীবন কখনো পার্ফেক্ট হয় না, এখানে অঘটন ঘটবেই। তাই একটি অঘটনের উপর নির্ভর করে বাকি জীবনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত নয়।
জীবনে কখনো কখনো ধাক্কা খাওয়া খুবই জরুরী। এর ফলে ভিন্নভাবে চিন্তা করার ক্ষমতা জন্মে মানুষের মাঝে যেটি নিজের সেল্ফ ডিসকাভারিতে পালন করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
খালেদের অনবদ্য সিনেম্যাটোগ্রাফি যেন আপনাকে নিয়ে যাবে কেরালার ইদুক্কিতে, বিজিবালের মিউজিক আর ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর আপনার কানকে করবে মোহিত। ডিরেক্টরের মুন্সিয়ানা, ফাহাদ ফাসিলের টপনচ পার্ফম্যান্স আর মুভির ফিল গুড ভাইবের সাথে কখন আপনি এই মুভির গল্পে পুরোপুরি মজে যাবেন তা বুঝতেও পারবেন না।
তাই সময় পেলে আজই দেখতে বসে যেতে পারেন মাহেশিন্তে প্রাথিগারাম (২০১৬) দেখতে।
This is a Bangla article. This is a review of Indian Malayalam language film Maheshinte Prathikaaram (2016).
All the necessary links are hyperlinked.
Featured images are collected from Google.