লিখুন
ফলো

হোয়াইট ডেথ: ইতিহাসের সর্বাধিক কিল রেকর্ড যে স্নাইপারের

ইতিহাসে অনেক দুর্ধর্ষ স্নাইপারের নাম রয়েছে। অপর দিকে কার উপাধি সবচেয়ে বড় এটা নিয়ে বিতর্কও রয়েছে। তবে আপনি যদি নিখুঁত দক্ষতা, চৌকশ অভিযান এবং সামগ্রিক কিল রেকর্ডের দিকে নজর দেন তাহলে ইতিহাসে এমন আর কোনো স্নাইপার নাই যাকে “হোয়াইট ডেথ বা শ্বেত মৃত্যু”রসাথে তুলনা করা যায়।

সিমো হাইহা; image source: historic.uk

হ্যাঁ, আমি ফিনিশ স্নাইপার সিমো হাইহা (Simo Häyhä)এর কথা বলছি। তাকে ইতিহাসের অন্যতম সেরা যোদ্ধাও বলা হয়ে থাকে।

সিমো হাইহা তার শত্রুপক্ষ রেড আর্মির কাছ থেকে “হোয়াইট ডেথ বা শ্বেত মৃত্যু” নামটি পান। তিনি শীতকালীন যুদ্ধে সোভিয়েত রেড আর্মির বিরুদ্ধে নিজের দেশ রক্ষায় প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তার ব্যবহৃত অস্ত্রটি ছিল ফিনিশ এম/২৮-৩০ রাইফেল। ১৯৩৯ সালে শীতকালীন যুদ্ধে তিনি অংশগ্রহণ করেন। সিমো হাইহাকে সোভিয়েত রেড আর্মিরা জমের মতো ভয় পেত। তারা তাকে যুদ্ধের ময়দানের শ্বেত মৃত্যু নাম দিয়েছিল ।

শীতকালীন যুদ্ধ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার মাত্র ৩ মাস পূর্বে ৩০ নভেম্বর, ১৯৩৯ সালে সোভিয়েত রেড আর্মি পোল্যান্ড আক্রমণের মাধ্যমে এর সূচনা ঘটে।

শীতকালীন যুদ্ধে সোভিয়েতরা ফিনল্যান্ড আক্রমণ করেছিল; image: britannica

এই যুদ্ধ ১০০ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল। সোভিয়েত ইউনিয়ন তাদের হারানো ভূখন্ড ফিনল্যান্ডকে পুনরায় নিজেদের করায়ত্তে নিতে চেয়েছিল।

সোভিয়েত ইউনিয়নের এই আক্রমণ তৎকালীন লীগ অব নেশনস অবৈধ আখ্যায়িত করে। ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৩৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নকে লীগ অব নেশনস থেকে বহিষ্কার করা হয়।

সোভিয়েত ইউনিয়ন ফিনিশদের তুলনায় তিনগুন বেশি সৈন্য ও এক’শ গুন বেশি যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে ফিনল্যান্ড আক্রমণ করে।

সোভিয়েতরা সম্ভবত ধরেই নিয়েছিল যে ফিনল্যান্ডের মতো একটি ক্ষুদ্র দেশ কোনোভাবেই তাদের প্রতিরোধ করতে পারবে না। কাজেই তাদের ধারণা ছিল খুব সহজেই ফিনল্যান্ড দখল করে নেওয়া যাবে। কিন্তু যুদ্ধের ময়দানে গণেশ উল্ডে যায়।

যুদ্ধ শুরু হওয়ার কিছুদিন পূর্বে ১৯৩৭ সালে সোভিয়েত নেতা ইওসিফ স্তালিনের গ্রেট পার্জ নীতি গ্রহণের ফলে রেড আর্মি তাদের নৈতিক মনোবল ও দক্ষতা হারিয়ে ফেলে। প্রায় ত্রিশ হাজারের মত সেনা কর্মকর্তা মৃত্যুদণ্ড ও যাবৎ জিবন দন্ডে দন্ডিত হন। এদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল উচ্চপদস্ত কর্মকর্তা। ঠিক এই কারণে ১৯৩৯ সালে শীতল যুদ্ধে অনভিজ্ঞ ও অদক্ষ সেনা কর্মকর্তারা উচ্চপদে অধিষ্ঠিত হন।

সিমো হাইহার বাল্য ছবি; image: britannica.com

উচ্চ আকাঙ্ক্ষা ও দঢ় মনোবলের কারণে ফিনিশরা সোভিয়েতদের বিরুদ্ধে ভালো অবস্থান নেয়। যুদ্ধের প্রথম দিকে ফিনিশ বাহিনীর পাল্টা আক্রমণে রেড আর্মি বিপর্যস্ত হয়ে যায়। ফিনিশ বাহিনী রেড আর্মির ব্যাপক প্রাণহানি ও যুদ্ধাস্ত্রের ক্ষতি সাধন করে।

সোভিয়েতরা যে বিষয়টি ধারণাও করতে পারেনি সেটা হলো ফিনিশরা একটি শব্দে বিশ্বাস করে সেটা হলো ‘সিসু’ (sisu) যার অর্থ সাহস এবং সংকল্প। যুদ্ধের ময়দানে এই শব্দের ব্যবহার তাদেরকে অপ্রতিরোধ্য করে তোলে। হাইহা তার দক্ষতা ও কৌশল সোভিয়েতদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করে।

মজার ব্যাপার হচ্ছে এডলফ হিটলার এই যুদ্ধ গভিরভাবে পর্যবেক্ষণ করছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে লেলিনগ্রাদ আক্রমণের পূর্বে হিটলার এই যুদ্ধের সূত্রে টেনে সোভিয়েতদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতেন। কিন্তু, মূলত বিষয় ছিল সোভিয়েতদের বিরুদ্ধে ফিনিশরা এই যুদ্ধে কিছুটা অতিমানবীয় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। মাতৃভূমি রক্ষায় তারা যে ত্যাগ দেখিয়েছিল তা সত্যিই অবাক করেছিল বিশ্ববাসীকে।

যুদ্ধের ময়দানে এমনও হয়েছে যে হাইহা মাত্র ৩১ জন সহচর নিয়ে ৪ হাজার রেড আর্মির বিরুদ্ধে মুখোমুখি হয়েছিল। সেখানে ৪০০ জন সোভিয়েত সৈন্যকে হত্যা করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল তারা।
মাত্র চার জন অবশিষ্ট মহাবীর ফিনিশ বেঁচে ছিলেন ওই যুদ্ধজয়ের আস্বাদ পেতে। তাহলে অনুধাবন করুন দেশ মাতৃকাকে রক্ষা করতে তারা কি বীরত্বটা দেখিয়েছে!

তার ক্ষিপ্রগতি ও কৌশলের কাছে সোভিয়েতরা কূল কিনারা খুজে পায়নি। এ যুদ্ধে ফিনিশরা তাদের ভূখণ্ডের মাত্র ১১ শতাংশ এবং ৩০ শতাংশ অর্থনীতি নিজেদের করায়ত্তে রাখতে সক্ষম হয়।

ফিনিশ বাহিনীর আক্রমণে সামগ্রিকভাবে প্রায় দেড়’লাখ সোভিয়েত নিহত হয়। এজন্য এক রুশ জেনারেল তো বলেই ফেলেছিলেন, যে জমি তারা দখল করেছিল ওটা নিজেদের মৃত সৈন্যদের কবরের জন্য দরকার ছিল ….

সর্বাধিক হত্যার রেকর্ড

সিমো হাইহা বিশ্বের সর্বাধিক স্নাইপার কিল রেকর্ড অর্জন করেন; image source: Wikipedia

সিমো হাইহা তার নিজের দেশের তৈরি সাধারণ একটি স্নাইপার রাইফেল হাতে নিয়ে সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেন। তাকে বলা হয় পৃথিবীর সর্বকালের সবচেয়ে দক্ষ স্নাইপার। তিনি শীতল যুদ্ধে দখলদার সোভিয়েত বাহিনীর হাত থেকে তার নিজের দেশ ফিনল্যান্ডকে রক্ষা করেছিলেন।

শীতলকালীন যুদ্ধে সোভিয়েতদের মৃত্যু দূত ছিলেন সিমো হাইহা। সিমো হাইহার চৌকশ হামলা আর দক্ষ স্নাইপিং এ অসহায় হয়ে পরে রেড আর্মিরা। রেড আর্মিদের কাছে সিমো হাইহা ছিল যেন এক সাক্ষাৎ মৃত্যুদূত। এই যুদ্ধে সিমো হাইহা ৫০৫টি হত্যার রেকর্ড গড়েন।

এটা ছিল কোনো একক যুদ্ধে সর্বাধিক স্নাইপিং হত্যার রেকর্ড। অনেকে ধারণা করে থাকেন তার হত্যা রেকর্ড ৮০০ এর বেশি, যেগুলো এখনও রের্কড করা সম্ভব হয়নি। তার জিবনে সেরা স্নাইপিং ছিল একদিনে ৪০ টা হত্যা রেকর্ড।

শুধুমাত্র সর্বাধিক হত্যা রেকর্ডই নয়, তিনি রেড আর্মির হাড়ে যে কাঁপন ধরিয়েছিলেন সেটা এক অনন্য রেকর্ড। পৃথিবীর আর কোনো স্নাইপার শত্রু পক্ষের কাছে এতটা জমদূত হিসেবে আবির্ভূত হননি।

প্রাথমিক জিবন

ফিনল্যান্ডের একটি প্রত্যন্ত খামারেই হাইহার বেড়ে ওঠা। সিমো হাইহা ১৭ ডিসেম্বর, ১৯০৫ সালে ফিনল্যান্ডের রৌতজারভি শহরে জন্মগ্রহন করেন। রৌতাজারভি ছিল মূলত একটি কৃষি প্রধান শহর। সিমো হাইহা ছোটবেলায় একটি খামারে কাজ করতেন। খামারে বেড়ে ওঠার কারণে হাইহা একজন পরিশ্রমী, ধৈর্যশীল ও কঠোর প্রকৃতির মানুষে পরিণত হন।

রৌতজারভি শীতকালীন যুদ্ধের মূল অংশগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল। রৌতাজারভিতো সে সময় ভয়ঙ্কর কিছু যুদ্ধ সংঘটিত হয়। পরবর্তীতে সোভিয়েত ভূখন্ডের অংশে পরিণত হয়। বর্তমানেও ফিনল্যান্ডের এই অংশটি রাশিয়ার অধীনে।

১৯২৫ সালে হাইহা ২০ বছর বয়সে এক বছর মেয়াদি সামরিক ট্রেইনিং গ্রহণ করেন। এই সামরিক ট্রেইনিং প্রত্যেক ফিনিশ নাগরিকদের জন্য বাধ্যতামূলক ছিল।

সামরিক ট্রেইনিং এর সময় হাইহা তার অসাধারণ দক্ষতা ওর দৃঢ় মনোবলের কারণে সবার নজর কাড়েন। মাত্র এক বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই হাইহা কর্পোরাল পদে উন্নীত হন।

সিমো হাইহা সর্বমোট ৮০০ এর অধিক স্নাইপার কিল করেন; image: history.uk

পরে তিনি ফিনিশ সিভিল গার্ডে যোগদান করেন। এটা ছিল হাইহার প্রথম চাকরি। এখান থেকে হাইহা তার স্নাইপিং শুটিং এর প্রতি তীব্র আগ্রহ খুজে পান। তার প্রতিভা বিকাশিত করারও সুযোগ পান এখানে।

তার চাকরীর পাশাপাশি অবসর সময়ে তিনি শুটিং নিয়েই পড়ে থাকতেন। তার সমস্ত সময় তিনি ব্যয় করতেন এই স্নাইপিং শুটিং এর পেছনে। আর এই কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি হয় ওঠেন দক্ষ একজন স্নাইপার হিসেবে।

অবশেষে হাইহা এখানে ৫০০ ফুট (১৫২ মিটার) দূর থেকে প্রতি মিনিটে ১৬ টি লক্ষ বস্তুতে নিখুঁতভাবে আঘাত করতে পারতেন। এই ট্রেইনিং হাইহাকে একজন দক্ষ স্নাইপার হিসেবে গড়ে তোলে। যা পরবর্তিতে তাকে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে সাহায্য করে।

হাইহার ‘হোয়াইট ডেথ’ হয়ে ওঠা

ধারণা করা ১০০ দিনের শীতকালীন যুদ্ধে হাইহা মোট ৮’শ এর অধিক হত্যা করেন। কিন্তু এখনও তার সব হত্যা রেকর্ড সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। রের্কডকৃত তথ্য অনুযায়ী হাইহা মোট ৫০৫ টি হত্যা করেন। যা কোনো যুদ্ধে সর্বকালের সবচেয়ে বেশি স্নাইপিং কিল রেকর্ড। এছাড়া তিনি এক দিনেই ৪০টি হত্যার রেকর্ড গড়েন।

সোভিয়েতরা সিমো হাইহাকে নাম দিয়েছিল ‘হোয়াইট ডেথ’; image source: Wikipedia

হাইহা সাদা ছদ্মবেশি পোষাক পড়ে সাদা বরফের সাথে মিশে থাকতেন। তিনি মাত্র একদিনের রসদ সাথে নিতেন। যাতে তার ব্যবহারকৃত ব্যাগের ওজন কম হয়। সাদা তুষারের মধ্যে নিজেকে এমনভাবে তিনি মিশিয়ে দিতেন যে অতি নিকট থেকেও শত্রুপক্ষের সৈন্যরা তাকে দেখতে পেত না।

এমনকি নিজের শ্বাস আটকাতে মুখের মধ্যে বরফ গুজে নিতেন। মাত্র ৫ ফুট উচ্চতার হাইহা হয়ে ওঠেন রেড আর্মির আতঙ্কের কারণ। ওয়ে ওঠেন সোভিয়েত সেনা ক্যাম্পের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।

হাইহা উন্নত ও আধুনিক স্নাইপার মডেলকে প্রত্যাখ্যান করে নিজের (ফিনিশ এম২৮/৩০ রাইফেল) স্নাইপার ব্যবহার করতেন। হাইহা তার স্নাইপারের স্কোপটি পর্যন্ত খুলে ফেলেছিলেন। কারণ, তিনি দাবি করেছিলেন যে তার এই স্কোপের কাঁচে সূর্যের আলো পড়লে সেটা শত্রুপক্ষের নজরে পড়তে পারে। নিজের অবস্থান গোপন করতেই হাইহা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। হাইহা জানতেন যে তার এই ফিনিশ রাইফেলটি বরফের মধ্যে যুদ্ধ করার ক্ষেত্রে আদর্শ। সেই জন্য তিনি অন্যান্য আধুনিক রাইফেলকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।

তার দুর্ধর্ষ কৌশল আর দক্ষতা সোভিয়েত সৈন্যদের হাড়ে কাঁপন ধরিয়ে দেয়। রেট আর্মিরা তাকে জমদূতের ন্যায় ভয় পেতে শুরু করে। রেড আর্মিদের কাছে হাইহা ‘হোয়াইট ডেথ বা শ্বেতমৃত্যু‘ নামে পরিচিতি পান। আর ফিনিশ সহযোদ্ধারা তেকে ডাকত ‘ম্যাজিক শুটার’ বলে।

“ম্যাজিক শুটার” নামে পরিচিত ছিলেন সিমো হাইহা; image: wikimedia

১৯৪০ সালের মার্চ মাসে হাইহা জঙ্গলে তার স্নাইপার নিয়ে পজিশন নেন। কিন্তু রেড আর্মির স্নাইপারের নজরে পড়ে যান তিনি। স্নাইপারের একটি গুলি এসে হাইহার মুখের বাম অংশে আঘাত করে।

এই ঘটনায় ১১ দিন হাইহাকে কোমায় থাকতে হয়েছিল। ততদিনে শীতকালীন যুদ্ধ শেষ হয়ে যায় এক শান্তি চুক্তির মাধ্যমে। কিন্তু তার বাম গালের বিকৃতি স্থায়ীভাবে থেকে যায়।

এই আঘাতটিই সিমো হাইহার সামরিক ক্যারিয়ারের সমাপ্তি ঘটায়। ফিনিশ সামরিক বাহিনীর প্রধান ফিল্ড মার্শাল ম্যাননারহিমের কাছথেকে তিনি সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে পদন্নোতি পান। এছাড়া বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থার কাছথেকে তিনি রের্কড সংখ্যক পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন করেন।

দ্যা হোয়াইট ডেথ (২০১৬)

২০১৬ সালে সিমো হাইহার অবদান নিয়ে একটি শর্ট ফিল্ম নির্মিত হয়। পরিচালক ও অভিনেতা টনি কোল এই স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেন। এই ফিল্মে টনি কোল সোভিয়েত সৈন্যের ভূমিকায় অভিনয় করেন। অপরদিকে সিমো হাইহার চরিত্রে অভিনয় করেন স্টিভ মিলস।

শেষ দিকে চূড়ান্তভাবে ফিনল্যান্ড পরাজয়ের দিকে এগিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও হাইহার সাফল্যগুলো ছিল জাতি জন্য অনুপ্রেরণার। নিজের দেশকে রক্ষায় তিনি যে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন তা দেশে দেশে প্রশংসার জোয়ারে ভেসেছিল। নিজের দক্ষতা আর কৌশলকে কাজে লাগিয়ে মাতৃভূমির প্রতি ভালাবাসার এক অনন্য নিদর্শন তৈরি করেছিলেন সিমো হাইহা।

সিমো হাইহার সমাধি; image source: Wikipedia

পরবর্তী দশকগুলোতে হাইহা স্নাইপিং দক্ষতা অব্যাহত রাখেন। এসময় তিনি ফিনিশ প্রেসিডেন্ট উরহো কেককোনেনের সাথে নিয়মিত শিকারে যেতেন। এছাড়া বিভিন্ন শুটিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতেন।

জিবনের শেষ সময়গুলোতে তিনি শান্তিপূর্ণ অনাড়ম্বর জিবনযাপন করতেন। তার ইচ্ছা অনুযায়ী ফিনিশ সরকার কর্তৃক তাকে একটি খামার দেওয়া হয়। সেখানে তিনি তার সখের কুকুর প্রজনন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলেন।

স্বল্পভাষী হাইহাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ও পুরষ্কৃত করার জন্য আহবান করা হত। যখন জানতে চাওয়া হতো একটি মাত্র স্নাইপার হাতে নিয়ে কিভাবে তিনি পাচ’শ এর অধিক সোভিয়েত সৈন্যকে খতম করলেন, তখন তিনি মুচকি হেসে বলতেন “শুধু অনুশীলন এবং অনুশীলন”

১লা এপ্রিল, ২০০২ সালে ৯৬ বছর বয়সে সিমো হাইহা শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ফিনল্যান্ডের রৌকালাথি চার্চের সামনে তাকে সমাহিত করা হয়। ফিনিশদের কাছে তিনি এক জাতীয় বীর হিসেবে চির অম্লান হয়ে আছেন।


This is a bengali article. It’s written about the most deadly sniper in history, Simo Haiha.

All the reference are hyperlinked within article.
Featured image: history-uk.com
Total
0
Shares
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous Article

দ্য ক্ল্যাশ অব সিভিলাইজেশন: পশ্চিমা সভ্যতা বনাম ইসলাম

Next Article

কিউএ্যানন এবং মার্কিন কংগ্রেস ভবনে হামলার ইতিহাস

Related Posts

মঙ্গল গ্রহ এবং আরব আমিরাতের শহর নির্মাণের পরিকল্পনা

সৌরজগতের আটটি গ্রহের মধ্যে যেটা নিয়ে মানুষের কৌতুহলের কখনাে কমতি ছিল না, সেটা নিঃসন্দেহে মঙ্গল গ্রহ। সূর্যের চারপাশে…

লায়লা খালিদ: ইসরায়েলের বিমান ছিনতাই করেছিল যে ফিলিস্তিনি তরুণী

দিনটি ছিল ১৯৬৯ সালের ২৯ আগস্ট। রোম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানের জন্য অপেক্ষমান অন্য যাত্রীদের সঙ্গে বসে আছে এক…

ব্লু অরিজিন : জেফ বেজোসের স্পেস ফ্লাইট কোম্পানি [পর্ব – ১]

ব্যয়বহুল, পুনরায় ব্যবহার করা সম্ভব নয় এমন রকেটগুলো এখন ইতিহাস৷ ধরিত্রীকে রক্ষার জন্য এখানকার ভারী ইন্ডাস্ট্রিগুলোকে মহাশূন্যে নিয়ে…

যেভাবে আমেরিকা পরিণত হলো বৈশ্বিক সুপার পাওয়ারে (পর্ব -২) : (ব্রেটন উডস কনফারেন্স থেকে বর্তমান)

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরই মূলত বিশ্বজুড়ে আমেরিকার প্রভাব স্থায়ী রুপ লাভ করে। ১৯৪৫ সালে ২৪শে অক্টোবর ৫১টি দেশের অংশগ্রহণে…

আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন

Total
0
Share