ম্যাসেঞ্জারের পরে সবচাইতে জনপ্রিয় ম্যাসেজিং অ্যাপ হচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপ। এত লম্বা সময়েও এর জনপ্রিয়তা কমেনি। সব জেনারেশনের মানুষরাই ব্যবহার করছেন এই অ্যাপটি। প্রায় স বিলিয়ন মানুষ ব্যবহার করছে হোয়াটসঅ্যাপ।
হোয়াটসঅ্যাপের যাত্রা
সময়টা ২০০৯ ইয়াহুর সাবেক কর্মী ব্রায়ান এক্টন ও জ্যান কউম দুজনে একসাথে কাজ করে তৈরি করেন হোয়াটসঅ্যাপ । যখন তারা এই ম্যাসেজিং অ্যাপটি তৈরি করে তাদের ধারণাই ছিলো না সময়ের ব্যবধানে এটি এত মানুষের কাছে পৌছে যাবে। জনপ্রিয় ও প্রতিষ্ঠিত তসার্চ ইঞ্জিন ইয়াহু ছাড়ার সিধান্তে তাদেরে অনেকে বাধা দিলেও তাদের সফলতা নতুন কিছু করার অনুপ্রেরণা দিচ্ছে অনেকেই।
ইয়াহু ছাড়ার মূল উদ্দেশ্য ছিলো তারা সবচাইতে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কাজ করবেন। কিন্তু ভাগ্য তখন তাদের সারা দেয়নি। তারা ফেসবুকে কাজ করার সুযোগ পাননি। হতাশ হয়ে থেমে না থেকে জ্যান কউম তার ইয়াহু থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়ে নতুন কিছু করবার পরিকল্পনা করেন। তিনি নতুন একটি আইফোন কিনেন এবং প্যাপেল স্টোরে নতুন অ্যাপ সংযোগ করার বিষয়টি নিয়ে ভাবতে থাকেন। বিষয়টি জানান বন্ধু অ্যালেক্স ফিসম্যান। তিনি তার বন্ধুকে বলেন একাজের জন্য তার একজন দক্ষ আইফোন অ্যাপ ডেভেলপারের দরকার প্রয়জন। অ্যালেক্স বন্ধুর কথায় সাড়া দিয়ে রুশ ডেভেলপার ইগর সলমনকিয়েভ সাথে পরিচয় করিয়ে দেন জ্যানের সাথে। জ্যান ইগরকে অ্যাপটি নির্মানের কাজ দেন। ইংরেজি শব্দ “হোয়াটস আপ” থেকেই হোয়াটসঅ্যাপ।
জ্যান কউমের জম্মদিনের দিন ২০০৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ক্যালিফোর্নিয়ায় হোয়াটসঅ্যাপ ইনকরপোরেটেড শুরু করা হয়। প্রথম অবস্থায় হোয়াটসঅ্যাপ ক্র্যাস করত অনেক বেশি। জুয়ান অবস্য প্রতিনিয়ত কাজ করেগেছেন তার প্রচেষ্টায় সমস্যাগুলো দূর হতে থাকে। ২০০৯ সালেই মেসেজ ফিচার যুক্ত করে বের করা হয় হোয়াটসঅ্যাপ ২.০। এতেই সফলতার সূচনা হয় ব্যভারকারির সংখ্যা দাড়ায় ২ লাখের মত।
নতুন করে এগিয়ে যাওয়া
ইয়াহুর বন্ধু ব্রায়ান এক্টনের সাথে দেখা করেন জ্যান। হোয়াটসঅ্যাপের সাথে কাজ করার জন্য প্রস্তাব দেন সাবেক সহকর্মী ও বন্ধুকে। সেসময়েও ব্রায়ান নতুন একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত ছিলেন, তাই বন্ধুর প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান কাজ শুরু করেন হোয়াটঅ্যাপের সাথে। দুই বন্ধু মিলে কিভাবে আরো উন্নত করা যায় এ নিয়ে কাজ করতে থাকেন। ব্রায়ান এক্টনে ইয়াহুতে কর্মরত বন্ধুদের বলতে থাকেন হোয়াটসঅ্যাপে বিনিয়োগ করার জন্য। অনেকেই বিনিয়গ করেন এই ম্যাসেজিং অ্যাপ। নিজে বিনিয়গ করার পরে ব্রায়ান এক্টন হোয়াটসঅ্যাপের সহপ্রতিষ্ঠাতা হিসেবে পুরো দমে নতুন করে কাজ শুরু করেন।
ব্যবহারকারীর সংখ্যা
মাত্র ২ বছরের মধ্য ২০১১ সালে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাপল অ্যাপষ্টোরের সেরা ২০ অ্যাপে স্থান করে নেয়। ২০১৩ সালে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা.২,০০ মিলিয়নের বেশি হয়ে যায়। আর থেমে থাকতে হয়নি হোয়াটসঅ্যাপকে। তারা ২০১৪ সালের ২২ এপ্রিল জানায় তাদের সক্রিয় ব্যবহারকারী ৪০০ মিলিয়ন, যা ২০১৫ সালেই ৭০০ মিলিয়নে পৌঁছে যায়। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে জানানো হয় ১৫০ কোটি মানুষ ব্যবহার করছে এই ম্যাসেজিং অ্যাপটি।
হোয়াটসঅ্যাপ আয়ঃ
ব্যাংক, এয়ার লাইন্স ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান কথা বলার জন্য সরাসরি হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে সাবস্ক্রিপশন কেনার মাধ্যমে। ২০১৯ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী শুধুমাত্র ইন্ডিয়াতেই হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার কারীর সংখ্যা প্রায় ৪০০ মিলিয়ন। যেখান থেকে হোয়াটসঅ্যাপ এর রেভিনিউ ৬.৮৪ কোটি রুপি।
হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুক
২০১৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিনে নেয় হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাপটি। ১৯০ কোটি ডলার ব্যয় করে ফেসবুক কিনে নেয় এই জনপ্রিয় অ্যাপটি। একেই বলে ভাগ্য যে ফেসবুকে কাজ করতে চাইতেন দুই বন্ধু তাদের বানানো অ্যাপটি কিনে সয়ং ফেসবুক। এই অ্যাপটি কেনার সময়ে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ বলেন, প্রতিদিন ১০ লাখ মানুষ হোয়াটসঅ্যাপ ডাউনলোড করছেন এবং ৪৫ কোটি মানুষ এটা ব্যবহার করছে।
এর ৩ দিন পর জ্যান কউম জানান তারা হোয়াটসঅ্যাপের ভয়েস কল নিয়ে কাজ করছে। আর জার্মানিতে নতুন স্মার্ট ফোনগুলোতে তারা হোয়াটসঅ্যাপ নিয়ে আসতে যাচ্ছে। আর ফিরতে হয়নি। ২০১৫ সালের আগেই স্মার্টফোনে আসে ফেসবুক। আপডেট দিয়ে ভয়েস কলের সাথে যুক্ত করা হয় ভিডিও কলের সুবিধা।
সাফল্যের লক্ষ্যে পৌছাতে যে পরিশ্রম করতে হয় হতাশাকে দূরে রেখে হোয়াটসঅ্যাপ তার একটি বড় উদাহরণ। তাদের পরিশ্রমে তারা আজ সাড়া বিশ্ববাসীর কাছে জনপ্রিয়। আমরা অনেকেই আছি যারা কোন কাজ শুরু করে শেষ না করেই হতাশ হই কিন্তু ব্যার্থতার কারণ খুজে সেটা দূর করলে কিন্তু আমাদের থেমে থাকতে হয়না আমরা এগিয়ে যেতে পারি।
This is a Bangla Article. Here, everything is written about the WhatsApp.
Featured image taken from the google.